সাম্প্রতিক কালে সাহিত্যের উপন্যাস শাখায় বেশ সাহসী আঙ্গিক গড়ে উঠেছে। বঙ্কিম চন্দ্রের 'কৃষ্ণকান্তের উইল' বা 'কপালকুন্ডলা' এখন "হাঙ্গর নদী গ্রেনেড" বা "রাইফেল রুটি আওরত" রূপে রূপান্তরিত হয়েছে। সমসাময়িক ঘটনাবলীর বাস্তব চিত্রায়ণ আধুনিক উপন্যাসের বড় লক্ষণ। লেখকের বাস্তব অভিজ্ঞতা নিঃছিদ্ররূপে দেখা দেয় লেখনিতে। ভাষার কৌশলগত ব্যবহারে তাই হয়ে ওঠে সাহিত্য শিল্প। তরুণ লেখক শফিউল আজম ডালিমের প্রথম উপন্যাস 'কোন পাপ করিনি', পাঠ করলে বুঝা যায় কি কৌশলে তার জীবনের চার পাশের বাস্তব ঘটনাকে একত্রিত করে একটি সুন্দর উপন্যাস হিসেবে পাঠককে উপহার দিয়েছেন তিনি। তার সঙ্গে আছে আধুনিক জীবনের হঠকারিতা; বিশেষ করে তরুণ সমাজের করুণ চিত্র। "কোন পাপ করিনি” এই ছোট্ট উপন্যাসের কাহিনীর কথাই আগে বলি। কাহিনীটি রসিকতায় ভরা। এখানে পাই অপু নামের একজন ছাত্রের জীবন বৃত্তান্ত। অপু নামটি অবশ্য কর্জ করা। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথের পাঁচালী উপন্যাসের। সপ্তম শ্রেণি থেকেই অপুর জীবনে নানা জিজ্ঞাসা জেগেছে। 'মেয়ে হলে অপু সুখী হতো', অপু ভেবে দেখল "অকেজোদের মেয়ে হয়ে জন্মানোটাই ভালো। পদে পদে সহায়তা করার লোক জোটে। একটি পতি জোটে যে পতন থেকে রক্ষা করে। ।" আমাদের দেশের বালক-বালিকারা প্রথমেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। চোখের সামনে এগার বছরেই অন্ধকার দেখে। কবিতা লেখার বয়সও এটাই। বার বছর বয়সে কবি কায়কোবাদের বিরহ বিলাপ কাব্য প্রকাশ পেয়েছিলো।