এক দেশে ছিল এক মস্ত বড় জমিদার। তার ছিল পাঁচটি ছেলে। চার ছেলের ছিল সুন্দর চার বউ। ছোট ছেলেটি ছিল সুন্দর অথচ ভীষণ অলস। এতো অলস যে শুয়ে বসেই তার দিন কাটে। এমনকি কলাটি পর্যন্ত খোসা ছাড়িয়ে খেতে পারেনা। তবু চার বৌদির বড় আদরের দেবর ছিল ছোট কুমার। একদিন বড় বৌদি দুষ্টুমি করে বলল ইস্ আলসে ছোট কুমারের ঘরে কোন মেয়েই আসবেনা। আমার ভীষণ দুঃখ লাগছে। ছোট কুমার খাটের পাশেই বসেছিল পা দুলিয়ে বড় বৌদির কথায় তড়াক করে লাফিয়ে উঠে বললো, কি! যতো বড় মুখ নয় ততবড় কথা। দেখে নিও বড় ভাবী বা বৌদি, আমার বউ হবে সবচেয়ে বেশি সুন্দরী। নেই বলা সেই কাজ। ছোট কুমার একটা ছোট ফল একটা বেতের ছড়ি নিয়ে থ্রুং নিয়ে বের হলো বউ খুঁজতে। সুন্দর সূর্যটা সোনালি আলো ছড়িয়ে পূর্বের আকাশ থেকে তখন মধ্য গগনে বিরাজ করছে। অনেক উঁচু পাহাড়। পাথরের বড় বড় চাই পেরিয়ে ছোট কুমার হাঁটতে লাগলো। ঘন নিবিড় বনে গাছগুলি মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। ছোট কুমারের স্বা¯ে’্যর দীপ্তিতে ভরা মুখখানা টকটকে লাল দেখা”েছ। সে পিপাসায় কাতর হয়ে পড়ল। একটা বড় গাছের তলার। ঝিরঝিরে বাতাসে চোখে কেমন একটা ঘুম ঘুম আবেশ। হঠাৎ একটা হলুদ পাখি গাছের শাখায় ডেকে উঠল। কুমারের তন্দ্রা ভাব কেটে গেল।
শােভা ত্রিপুরা পেশায় অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কবি, কথা সাহিত্যিক ও সমাজ সেবিকা শােভা ত্রিপুরা’র জন্ম ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায়। তার পিতা স্বর্গীয় মি. লবঙ্গ কুমার ত্রিপুরা এবং মাতা স্বর্গীয় মিসেস কনবালা ত্রিপুরা। তিনি এইচএসসি ও সি-ইনড ডিগ্রি লাভের পর শিক্ষকতায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী ২০১৬ সালের ২১শে পদক প্রাপ্ত গবেষক মি. মংছেনচীং মংছিন-এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের বর্তমান নিবাস খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মহালছড়ি উপজেলার রাখীস্মৃতি পাড়ায়। ব্যক্তিজীবনে তিনি দুই কন্যা সন্তানের জননী। বড় কন্যা প্রিয়াংকা পুতুল, জাতীয় পুরস্কার (স্বর্ণপদক) প্রাপ্ত সহকারি শিক্ষিকা শুকরছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি সদর-এ কর্মরত। কনিষ্ঠ কন্যা চেনচেন ২০১১ সালের শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক সহ রৌপ্য পদক প্রাপ্ত এল এল বি অনার্স এল এল এম ।। কবি শােভা ত্রিপুরা সাহিত্য, সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও উপস্থাপনায় তাঁর স্বচ্ছন্দ বিচরণ রয়েছে। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ১৫টির অধিক। তিনি জেলা ও উপজেলা শ্রেষ্ঠ শিক্ষক পুরস্কারসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কার ও পদকে ভূষিত হয়েছেন। সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণ বেগম রােকেয়া পদক-২০১৭ খ্রিস্টাব্দ প্রাপ্ত। এছাড়াও বাংলাদেশ ফোকলাের (গ্রামীণ লােকসাহিত্য) সােসাইটি ও বিশ্ব বাংলা সাহিত্য পরিষদ সদস্য সহ অনেক সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত।