ত্রিপুরা জাতির কিংবদন্তী প্রস্তাবনা আদিবাসীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্স্টিটিউট বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা হতে এ পর্যন্ত অনেক প্রবন্ধ, ম্যাগাজিন এবং আদিবাসীদের কিংবদন্তী প্রকাশিত হলেও ত্রিপুরা জাতির কিংবদন্তী একটিও প্রকাশিত হয়নি। সহযোগিতা এবং পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এ পর্যন্ত আমার লিখিত কিংবদন্তীগুলি প্রকাশিত করতে পারিনি। তবে সংগৃহীত কিংবদন্তী কথাগুলি যখন আমি ত্রিপুরা অধ্যুষিত এলাকা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মহালছড়ি থানা, সিন্ধুকছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে কাজে যোগদান করি, তখনকার লেখা ১৯৮০ সালের। বুড়োবুড়িদের মুখ থেকে শুনে এবং ছোটবেলায় বাবা মার মুখে গল্পগুলি শুনে লেখার চেষ্টা করি। অধিকাংশ লেখাই আমার ছাত্রীজীবনের। তারপর আমি যখন ১৯৮৯ হতে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় চাকুরি করি তখন অনেক চেষ্টা করেও আর্থিক অভাবে প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। অনেকদিন পর্যন্ত এগুলি অবহেলিত অবস্থায় পড়েছিলো। আমার স্বামী “রাখাইন ইতিবৃত্ত” গ্রন্থকার সাহিত্যিক ও সাংবাদিক মি. মংছেনচীং (মংছিন্) সেগুলি যত্ম করে সংরক্ষণ করেন। সে জন্য আমি তাঁর কাছে ঋণী। আশা করি, লুপ্তপ্রায় কিংবদন্তী পাঠকের মনে কিছুটা আনন্দের ছোঁয়া দেবে। আমার লেখা এবং শব্দ চয়নে অনেক ভুল থাকতে পারে। যেহেতু এগুলির অনেকগুলি আমার অপরিণত বয়সের লেখা। আশা করি, পাঠক-পাঠিকারা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। পরিশেষে, যারা এই গল্পগুলি লেখার পিছনে আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন সেই শ্রদ্ধেয় বাবা-মা এবং বুড়োবুড়িদের কাছে আমি ঋণী। সেই সাথে স্বনামধন্য প্রকাশনার প্রকাশক, বইটি প্রকাশনার ভার নিয়েছেন সেই জন্য তাঁর কাছেও চিরঋণী। শোভা ত্রিপুরা প্রধান শিক্ষক, কবি ও কথা সাহিত্যিক
শােভা ত্রিপুরা পেশায় অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কবি, কথা সাহিত্যিক ও সমাজ সেবিকা শােভা ত্রিপুরা’র জন্ম ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায়। তার পিতা স্বর্গীয় মি. লবঙ্গ কুমার ত্রিপুরা এবং মাতা স্বর্গীয় মিসেস কনবালা ত্রিপুরা। তিনি এইচএসসি ও সি-ইনড ডিগ্রি লাভের পর শিক্ষকতায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী ২০১৬ সালের ২১শে পদক প্রাপ্ত গবেষক মি. মংছেনচীং মংছিন-এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের বর্তমান নিবাস খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মহালছড়ি উপজেলার রাখীস্মৃতি পাড়ায়। ব্যক্তিজীবনে তিনি দুই কন্যা সন্তানের জননী। বড় কন্যা প্রিয়াংকা পুতুল, জাতীয় পুরস্কার (স্বর্ণপদক) প্রাপ্ত সহকারি শিক্ষিকা শুকরছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি সদর-এ কর্মরত। কনিষ্ঠ কন্যা চেনচেন ২০১১ সালের শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক সহ রৌপ্য পদক প্রাপ্ত এল এল বি অনার্স এল এল এম ।। কবি শােভা ত্রিপুরা সাহিত্য, সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও উপস্থাপনায় তাঁর স্বচ্ছন্দ বিচরণ রয়েছে। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ১৫টির অধিক। তিনি জেলা ও উপজেলা শ্রেষ্ঠ শিক্ষক পুরস্কারসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কার ও পদকে ভূষিত হয়েছেন। সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণ বেগম রােকেয়া পদক-২০১৭ খ্রিস্টাব্দ প্রাপ্ত। এছাড়াও বাংলাদেশ ফোকলাের (গ্রামীণ লােকসাহিত্য) সােসাইটি ও বিশ্ব বাংলা সাহিত্য পরিষদ সদস্য সহ অনেক সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত।