বাঙালির ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের তালিকা করলে যে ক'জনের নাম সবার শুরুতে আসবে তাদের মধ্যে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক অন্যতম। অসীম সাহসিকতার জন্য তিনি “বাংলার বাঘ” বা “শেরে বাংলা” উপাধি পেয়েছিলেন। তাঁর পুরো নাম আবুল কাশেম ফজলুল হক । এই মহান নেতার জীবনরেখা ব্যাপক। অল্প কথা তাকে তুলে আনা খুব কঠিন। ক্ষমতাশীল নেতার কর্মের ভেতরে ছিলনা কোনো ধাম্ভিকতা। শেরে বাংলা যখন ক্ষমতা হারালেন তখন সারাদেশে চলছিল বসন্ত মহামারী। তিনি তাঁর অনুসারীদের নিয়ে গঠন করলেন একটি সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান— পূর্ব পাকিস্তান সেবা সমিতি। আত্মনিয়োগ করলেন আর্তমানবতার সেবায়। জীবনের শেষ প্রান্তে শেরে বাংলার শেষ জীবনটা ছিল বড় নিঃস্ব এবং দুঃখভারাক্রান্ত। সেকালের মুসলিম লীগ সরকারও তাঁর প্রতি বিন্দুমাত্র সুনজর দেয়নি। যাঁরা তাঁরই অনুগ্রহে সুবিধা ভোগ করেছিলেন, তাঁরাও একবার দেখতে আসেননি তিনি বাংলার বরিশালের কৃতিসন্তান। বাংলার মহান নেতা। যিনি সারাজীবন ভারতবর্ষের কৃষক, শ্রমিক, কুলি-মজুর সহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষের শান্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন। অর্ধশতাব্দীরও বেশিকাল ধরে ইতিহাসের অবিসংবাদিত মহানায়করূপে অধিষ্ঠিত থাকার পর ১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল তারিখে বাঙালি জাতির এই মহান নেতা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । বৃহত্তর বরিশালের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্ষণজন্মা এই মহান নেতা শেরে বাংলার বিরাট ব্যক্তিত্বে ছিল আশ্চর্য উপাদানের বিস্ময়কর সংমিশ্রণ । এই ব্যক্তিত্বের ছিল একাধিক প্রতিভা, বুদ্ধি ও যুক্তি এবং অন্যদিকে আবেগ, উচ্ছ্বাস, সরলতা ও উদারতা। তাঁর ব্যক্তিচরিত্রের অনেক ঘটনা অপূর্ব নাটকীয় ও বিস্ময়কর প্রতিভা দেশ, জাতি ও বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিত। তিনি আজীবন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসিবে ইতিহাসের পাতায় চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
মালেক মাহমুদ এ সময়ের আলােচিত ছড়াকার ও শিশুসাহিত্যিক। তাঁর ছড়া ও কিশাের কবিতা, ছােটদের গল্প পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে আসছে নিয়মিত লিখছেন অবিরাম। এ সময়ের হাতেগােনা যে কজন ভালাে লিখছেন মালেক মাহমুদ তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর শিশুকিশাের ছড়াকবিতার বইয়ের সংখ্যা ২৬। তাঁর ছড়ায় ভাবনার বিষয় বারবার ফিরে যায় মানবিক মূল্যবােধের দিকে। ভাঙাগড়ার ছাপও স্পষ্ট। ফুটে ওঠে নিজস্ব স্বকীয়তা। নবকল্লোলের জয়গান গল্পেও তিনি সিদ্ধহস্ত। গল্পের বইয়ের সংখ্যা ১০। তাঁর গল্প শিশুমনে আনন্দ জোগাতে সক্ষম। আনন্দের মধ্যে শিশুভাবনার জগতকে আরও প্রসারিত করতে অতি শীঘ্রই প্রকাশিত হবে গল্পসমগ্র। মালেক মাহমুদ ৫ এপ্রিল ১৯৬৯ সালে মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার গ্রামের নাম উত্তর মেরুন্ডী । পাঁচ ভাইবােনের মধ্যে তিনি তৃতীয় । পিতা সানাউল্লা প্রামানিক। মাতা সেরজান বেগম। স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিন ও একমাত্র কন্যা নাজমুন্নাহার রত্নাকে ঘিরে তার সংসার। তিনি বাংলা একাডেমির সদস্য।