সালাত কোনো সাধারণ আয়োজন বা আনুষ্ঠানিকতা নয় যে, দিনের মধ্যে এক বা একাধিক ঘণ্টা তাতে ব্যয় করে দিলেই দায় সেরে গেল। সালাতের উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার সাথে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করা। বিগলিত অন্তরে সিজদায় লুটিয়ে পড়া। . একটু ভেবে দেখুন তো, ক্ষুদ্র এই জীবনে সালাত নামক রণাঙ্গনে কতশত বার আপনাকে পরাস্ত করেছে বিতাড়িত শয়তান? কতবার সে সালাত থেকে আপনার মনোযোগ সরিয়ে দিগ্বিদিক নিয়ে গেছে? আর নিজের সঙ্গীসাথিদের কাছে নিজের বিজয়ের গল্প শুনিয়ে অট্টহাসিতে ফেটে পড়েছে! কখনো কি নিজেকে এই প্রশ্নগুলো করেছেন— কতবার সালাত শেষ হয়ে গিয়েছে, অথচ (মন কোথায় ছিল তা) আপনি টেরই পাননি? কতবার সালাতে মনোযোগ না থাকাকে আপনি হালকা ভেবে উড়িয়ে দিয়েছেন? কতবার এমন হয়েছে যে, সালাত আদায় করাটা খুব কঠিন আর ক্লান্তিকর মনে হয়েছে? কতবার আপনি গাফলতির সাথে সালাতে দাঁড়িয়েছেন, আর রাজ্যের আলস্য আর উদাসীনতা দিয়ে নিজেই শয়তানকে স্বাগত জানিয়েছেন? . সালাত ছিল রাসূল সা.-এর চক্ষুর শীতলতা। আপনি কি কখনো সেই স্বাদ আস্বাদন করেছেন? আপনি কি সালাতের হাজার বছর পুরোনো সেই স্বাদ ফিরে পেতে চান, যার মূর্ছনায় হারিয়ে যেতেন আমাদের সালাফগণ? . ইন শা আল্লাহ, ‘মনের মতো সালাত’ বইখানি আপনাকে সাহায্য করবে সেই স্বাদ ফিরে পেতে। আপনাকে সাহায্য করবে সালাতে উদাসীনতার চক্রব্যূহ থেকে বের হয়ে আসতে।
ড. খালিদ আবু শাদি খালিদ আবু শাদি মিসরের একজন প্রতিভাবান দায়ি ইলাল্লাহ। ১৯৭৩ সালের ১৮ মার্চ গারবিয়াহ প্রদেশের জিফতা নগরীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা করেন কুয়েতে। তারপর মিসরের কায়রো ইউনিভার্সিটিতে ফার্মেসি ফ্যাকাল্টি থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। শৈশব থেকেই তিনি প্রখর মেধা ও অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। কর্মজীবনের একটি বড় সময় তিনি দাওয়াহর কাজে ব্যয় করেন। লেখালেখিকেই তিনি দাওয়াহর মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন। তাঁর স্বতন্ত্র রচনাশৈলী আর হৃদয়গ্রাহী উপস্থাপনা সহজেই পাঠকদের নজর কাড়ে। মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার অদ্ভুত এক শক্তি আছে তাঁর কলমে। দাওয়াহ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় একে একে তিনি উম্মাহকে উপহার দেন ১৪টিরও বেশি মূল্যবান গ্রন্থ। ‘ইয়ানাবিউর রাজা’, ‘মাআন নাসনাউল ফাজরাল কাদিম’, ‘সাফাকাতুন রাবিহা’, ‘লাইলি বাইনাল জান্নাতি ওয়ান নার’, ‘বি-আইয়ি কালবিন নালকাহ’ ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা। এ ছাড়াও বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর অসংখ্য মূল্যবান প্রবন্ধ। কখনো বক্তৃতাকেও তিনি দাওয়াহর মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তাঁর হৃদয়-নিংড়ানো আহ্বান অসংখ্য পথহারা তরুণকে দ্বীনের পথে উঠে আসার প্রেরণা জুগিয়েছে। আমরা প্রতিভাবান এই দায়ি ইলাল্লাহর দীর্ঘ কর্মময় জীবন কামনা করি।