জীবনচলার বাঁকে বাঁকে আমরা প্রায়শ নানা ঘটনা বা সমস্যার সম্মুখীন হই। আমাদের বিরুদ্ধে কখনো কেউ কোনো ক্ষতি করতে চাইলে আমরা তার প্রতিকূলে দাঁড়িয়ে যাই, সোচ্চার হই। তাকে প্রতিহত করতে যৌক্তিক প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাই, প্রয়োজনে উঠেপড়ে লাগি। কখনো-বা তর্ক করি; ঝগড়া বা তর্জনী তুলতেও কুণ্ঠাহীন থাকি। সেই বিতর্ক বা প্রতিবিরোধ একপর্যায়ে মারামারি-হানাহানি, এমনকি যুদ্ধেরও রূপ-পরিগ্রহ করে। নিজের অবস্থানটি দৃঢ় রাখতে, সহজ কথায়, নিজেরই একান্ত স্বার্থটি হাসিলের উদ্দেশ্যে সরেজমিন ঝাঁপিয়ে পড়ি; এসব তো মূলত দৃশ্যগোচর এই পৃথিবীর নানা ঘটনা বা রোজনামচার কথা। . কিন্তু আমাদের অগোচরে, অদৃশ্যে, অন্তরালে বা জনান্তিকে কেউ কেউ আমাদের এমনই ক্ষতি করে বসেন, যা আমরা টের পাই না। দেখা যায় না যা আমাদের চর্মচক্ষে। যে ক্ষতি বা খারাপির সীমা-পরিসীমা নেই, এমনই অপূরণীয় লোকসান তা। ওইসব দৃশ্যমান ক্ষতি, এইসব অদৃশ্যমান সর্বনাশের সামনে আদতে তেমন কিছুই না, যে-সবের জন্য আমরা সচরাচর যুদ্ধ করি। . বলতে পারেন, সেই অদৃশ্য সর্বনাশা ক্ষতি বা ক্ষতিকর জিনিসটি কি? কী তার পরিচয়? তার পরিচয় সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের বাণী— وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ ۚ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ ‘তোমরা অনুবর্তী হয়ো না শয়তানের পদাঙ্কের। নিশ্চয়ই সে তোমাদের সুস্পষ্ট শত্রু।’ . শয়তানের শত্রুতা এবং তার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান সবিস্তারে তুলে ধরেছেন ড. খালি আবু শাদি ‘শয়তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ বইয়ের পাতায় পাতায়...
ড. খালিদ আবু শাদি খালিদ আবু শাদি মিসরের একজন প্রতিভাবান দায়ি ইলাল্লাহ। ১৯৭৩ সালের ১৮ মার্চ গারবিয়াহ প্রদেশের জিফতা নগরীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা করেন কুয়েতে। তারপর মিসরের কায়রো ইউনিভার্সিটিতে ফার্মেসি ফ্যাকাল্টি থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। শৈশব থেকেই তিনি প্রখর মেধা ও অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। কর্মজীবনের একটি বড় সময় তিনি দাওয়াহর কাজে ব্যয় করেন। লেখালেখিকেই তিনি দাওয়াহর মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন। তাঁর স্বতন্ত্র রচনাশৈলী আর হৃদয়গ্রাহী উপস্থাপনা সহজেই পাঠকদের নজর কাড়ে। মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার অদ্ভুত এক শক্তি আছে তাঁর কলমে। দাওয়াহ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় একে একে তিনি উম্মাহকে উপহার দেন ১৪টিরও বেশি মূল্যবান গ্রন্থ। ‘ইয়ানাবিউর রাজা’, ‘মাআন নাসনাউল ফাজরাল কাদিম’, ‘সাফাকাতুন রাবিহা’, ‘লাইলি বাইনাল জান্নাতি ওয়ান নার’, ‘বি-আইয়ি কালবিন নালকাহ’ ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা। এ ছাড়াও বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর অসংখ্য মূল্যবান প্রবন্ধ। কখনো বক্তৃতাকেও তিনি দাওয়াহর মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তাঁর হৃদয়-নিংড়ানো আহ্বান অসংখ্য পথহারা তরুণকে দ্বীনের পথে উঠে আসার প্রেরণা জুগিয়েছে। আমরা প্রতিভাবান এই দায়ি ইলাল্লাহর দীর্ঘ কর্মময় জীবন কামনা করি।