‘সাফল্যের বিজ্ঞান’ গ্রন্থে চারটি পরিচ্ছেদে সাফল্যের বিজ্ঞানভিত্তিক বা গবেষণানির্ভর উপায় ও উপকরণ যথাসাধ্য সহজ করে ব্যাখ্যা করব। আসর জমানো মুখরোচক গল্পের চেয়ে নির্মোহ বাস্তবতাকে বিবেচনায় নিয়ে সাফল্যের সবচেয়ে কার্যকর, অপরিহার্য সব উপায় এবং উপকরণকে এই গ্রন্থে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এ গ্রন্থটি জীবনের প্রতিটা সাফল্য-ব্যর্থতাকে নির্ভুলভাবে ব্যাখ্যা করতে আপনাকে সাহায্য করবে। প্রথম পরিচ্ছেদে সাফল্যকে সংজ্ঞায়িত করা, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা এবং সে লক্ষ্যে অবিচল থাকার জন্য যে ইতিবাচক মানসিকতার প্রয়োজন হয় অর্থাৎ যে কাঠামো বা কঙ্কালের ওপর সাফল্য রচিত হয় তা নিয়ে আলোচনা করব। দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে আমাদের ব্যর্থতার জন্য দায়ী প্রতিটা কারণ বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করব। অমূলক ভয়-ভীতি, অজানা আতঙ্ক এবং অকারণ আলস্য আমাদের সামনে যে অদৃশ্য দেয়াল তৈরি করেছে তার রসদ যোগান দিয়েছে আমাদের বেড়ে ওঠার পরিবেশ, জীবনের নানান অভিজ্ঞতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। আমাদের অজান্তেই আমরা তৈরি হয়েছি আজকের আমি-আপনি হিসেবে। মনের অবচেতনে লেখা নেতিবাচক দিকসমূহকে চিহ্নিত করা এবং তা মুছে ফেলার পদ্ধতি নিয়ে কথা বলব এ পরিচ্ছেদে। তৃতীয় পরিচ্ছেদে বিশেষ দক্ষতা (Hard Skills) নিয়ে কথা বলব। যাদের সামনে কজের সুযোগ বা সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা নেই, তাদের জন্য কিছু কাজের কথা বলব। আমাদের চারপাশে হাজারো সম্ভাবনাময় কাজ বা ব্যবসার সুযোগ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। কীভাবে একটা কাজ বা ব্যবসা শুরু করবেন তার কিছু সুনির্দিষ্ট ধারণা দেবো। স্বল্প সময়ে কর্মদক্ষতা তৈরি এবং বাস্তবতাকে জয় করার প্রমাণিত ও বৈজ্ঞানিক ধারণা নিয়ে কথা বলবÑযা একজন উদ্যোক্তা বা পেশাজীবীকে অন্যদের তুলনায় আলাদা উচ্চতায় নিয়ে যাবে। চতুর্থ পরিচ্ছেদে সফল মানুষদের সাতটি চিরন্তন অভ্যাস নিয়ে আলোচনা করব। পরিবেশ, অভিজ্ঞতা বা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা থেকে অথবা নিজে উদ্যোগী হয়ে যারা এ অভ্যাসগুলো তৈরি করেছে, সাফল্য তাদের কাছে নিশ্বাস নেয়ার মতোই স্বাভাবিক ব্যাপার। এই অভ্যাসগুলো দেশ, জাতি, পেশা নির্বিশেষে প্রতিটা সফল মানুষের মধ্যে বর্তমান। এ সাতটি অভ্যাস তৈরি করে অগণিত মানুষ তাদের জীবনকে আরো সুন্দর, সফল ও অর্থবহ করেছে। ডেভিড জে. শ্বার্টজ, নেপোলিয়ন হিল, অ্যান্থনি রবিন্স, শিব খেরা, স্টিফেন কভি, ডেল কার্নেগি, আত্মোন্নয়নের বিশ্ববরেণ্য সব লেখক, বক্তা, সুফীসাধক, ইয়োগি-ঋষি এই সাতটি শাশ্বত অভ্যাস তৈরি করতে বলেছেন। এ সাতটি অভ্যাস তৈরি করাই বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার মতো সবচেয়ে কঠিন কাজ। এ কারণেই আমরা বিভিন্ন মোটিভেশনাল স্পিচ বা ভিডিও থেকে ইউনিভার্সিটি ডিগ্রি ছাড়াই বিল গেটস বা মার্ক জুকারবার্গ হওয়ার ফর্মুলা পেয়ে যাই। এসব মুখরোচক গল্প খুবই ভালো লাগে কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? এ বই পড়ে আপনি বিল গেটস হবেন না, কেন হবেন না, তাও বুঝতে পারবেন। তবে সুখবর হচ্ছে, আপনাকে বিল গেটস হতে হবে না। সফল হতে হবে। সফল আপনি হতে পারবেন। কীভাবে? পড়তে থাকুন, চিন্তার দুয়ার খুলে। শুভ কামনা।