ইউরােপ সফর শেষে দেশে ফেরার পথে করাচি এয়াপাের্টে স্বল্পকালীন অবস্থানের সময় ভােলার প্রাক্তন এম.পি ও বিশিষ্ট জননেতা জনাব মােশাররফ হােসেন তালুকদার রাও ফরমান আলীর এ লেখাটি সম্পর্কে আলােচনা শােনেন এবং দেশে ফিরে আমাকে লেখাটি সংগ্রহ করে পড়তে বলেন। লেখাটি যেহেতু রাও ফরমান আলীর, এজন্য আমি বেশি উৎসাহবােধ করিনি। কারণ, আমাদের কাছে এ লােকটির স্মৃতি বড়াে বেদনাদায়ক। বিগত স্বাধীনতা যুদ্ধে বিভিন্ন কায়দায় বাঙালি নিধনের কাজে যারা ঠান্ডা মাথায় নিয়ােজিত ছিলেন, সম্ভবত তিনি ছিলেন তাদের শীর্ষে। বিশ্ব ইতিহাসে এমন অনেক দুর্ধর্ষ জেনারেল গত হয়েছেন, যারা শুধু হুকুম তালিম করার জন্যই যুদ্ধ করেছেন; ব্যক্তিগতভাবে এরা ছিলেন যুদ্ধবিরােধী এবং সংবেদনশীল। এসব কথা ধরা পড়েছে পরবর্তীকালে লিখিত তাদের আত্মজীবনী বা ভায়ারিতে, যা পড়ে লােকেরা অভিভূত হয়েছে। রাও ফরমান আলীর চিন্তাধারা ও উপস্থাপনাও ঠিক সেই পর্যায়ের কি না তা অনুধাবন করার জন্য অমি লেখাটি সংগ্রহে সচেষ্ট হই। পড়ে দেখলাম, লেখাটিতে মুক্তমনা ও উদারনৈতিক চিন্তাধারার স্বাক্ষর যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে। উপমহাদেশের ঘটনাবলীর নিরপেক্ষ বিচার বিশ্লেষণ। মােটামুটিভাবে এ লেখাতে আইউব খান থেকে শুরু করে ২৫ মার্চ '৭১-এ পূর্ব পর্যন্ত পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতা ও সামরিক জান্তার কোন্দল, দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের অন্তরঙ্গ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। পাঞ্জাবিদের নির্যাতন এবং বাঙালিদের মুক্তিযুদ্ধের পেছনে কার নেপথ্য ভূমিকা ছিল?-তিনি হলেন, ভুট্টো। সকল ঘটনার কলকাঠি ঘুরিয়েছেন ভুট্টো, আইউব ইয়াহিয়া ছিলেন তার ক্রীড়নক মাত্র।
প্রাবন্ধিক, অনুবাদক মােস্তফা হারুণ বাংলাভাষায় অনুবাদের জন্য বিশেষ স্থান গড়ে গেছেন। তার অনুবাদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে হয়। আমি গাধা । বলছি, গাঞ্জে ফেরেশতে, ভগবানের সাথে কিছুক্ষণ, মান্টো এবং কালাে শেলােয়ার-এর মতাে বিখ্যাত। বইয়ের প্রাণবন্ত অনুবাদ কর্মের জন্য ১৯৮৭ সালে শ্রেষ্ঠ অনুবাদক হিসেবে ত্রয়ী সাহিত্য পুরস্কার। লাভ করেন । ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসাবে প্রায় দুই দশক যাবত সক্রিয় মােস্তফা হারুণ দৈনিক পয়গাম, আজাদ ও ইত্তেফাকের সাথে যুক্ত ছিলেন।