গল্প ও জীবনসত্তার গভীর ডুবসাঁতারের খেলা। সেই ডুবসাঁতারের জলে থাকেন গল্পকার, দেখেন চরিত্র, আঁকেন গল্পের আখ্যান। এহছানুল মালিকী বাংলা গল্পের দুয়ারে নবীন যাত্রী। দেখছেন, শুনছেন চারপাশের বিচিত্র মানুষ। সেই সব মানুষের ভেতরের যন্ত্রণা, অসংগতি, আনন্দ, সুখ, বিবর্ণ অসুখ, মানুষের মধ্যে অমানুষের কীর্তি সবই দেখছেন গভীর দৃষ্টিতে। দেখা ও না-দেখার গল্পই লিখছেন এহছানুল মালিকী। ‘শক্তমাংস’ গল্পগ্রন্থের পনেরোটি গল্পে আমাদের দেখা বিচিত্র জীবনের আশা ও নিরাশার স্রোতে প্রবহমান জীবনের গল্প উঠে এসেছে। ‘ত্রাণের বস্তা’ গল্পে নগরের কঠিন বাস্তবতায় গ্রামীণ মানুষ কতটা অসহায়, তারই প্রতিবিম্ব প্রতিফলিত। ‘শক্তমাংস’ গল্পটিতেও নগরজীবনের চারদেয়ালের মধ্যে বসবাস করা মানুষের আত্মস্বার্থপরতার নির্মেদ দেয়াল ও পঙ্কিল অঙ্কের গণনা করেছেন তীব্র সৌন্দর্যচেতনায়। রাজনীতির ঘোরাটোপে পড়ে কত নিরপরাধ-নির্দোষ মানুষ বেঘোরে প্রাণ হারান আর সেই মৃত মানুষকে নিয়ে মিছিল ও মিছিল-পরবর্তী ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়ার মর্মান্তিক গল্প আখ্যান ‘খাটিয়ার মিছিল’। এহছানুল মালিকীর গল্প মাটিতে থেকে মাটির মানুষের আরও নির্দিষ্ট করে লিখলে, সাধারণের গল্প। যেই গল্পের জালে বিস্তার করে আছে জীবনদরিয়ার ঘাঙ্গুরের স্রোত।
ড. আ. ন. ম এহছানুল মালিকী। জন্ম : ঢাকার মুগদাপাড়া। পৈতৃক নিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থাকায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বাংলাদেশ বেতারে সংবাদ উপস্থাপনার পাশাপাশি তিনি ‘বাংলাদেশ প্রতিবেদনের’ একজন সিনিয়র সাংবাদিক। এছাড়াও তিনি দৈনিক পত্রিকা ও মাসিক পত্রিকায় লেখালেখিতে রয়েছেন। তার সর্বপ্রথম ২০২০ সালে একুশের বইমেলাতে ‘মুক্তিরপথের অগ্রদূত : নেতাজি সুভাষ (সম্পাদিত), ২০২১ সালে উপন্যাস ‘ভালোবাসার পাঞ্চক্লিপ, ২০২১ সালে ‘বাবাবৃক্ষ’ (সম্পাদিত), ২০২১ সালে ‘সম্পর্কের বৃত্ত’ (সম্পাদিত), ২০২১ সালে ‘হেরার জ্যোতি’ (সম্পাদিত), ২০২১ সালে নীতিতে আপোষহীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব (সম্পাদিত) প্রকাশিত হয়। তিনি ২০২১ সালে নবকন্ঠ প্রকাশনী হতে সেরা লেখক ও ২০২২ সালে উপন্যাস ‘ভালোবাসার পাঞ্চক্লিপ’-এর জন্য বাংলাদেশ তারুণ্য সাহিত্য একডেমি হতে সেরা কবি-লেখক সম্মাননা পান। [email protected]