বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলন : ১৯৪০-১৯৮২ বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাংস্কৃতিক পটভূমি অনেকে নির্মাণ শুরু করেন মুসলিম লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনগুলির তামদ্দুনিক তৎপরতা থেকে। পাকিস্তান না- হলে বাংলাদেশ হত না সেই বোধ এঁদের মনে প্রত্যক্ষে বা প্রচ্ছন্নে বিদ্যমান। এই বইয়ে লেখক অন্যভাবে সাংস্কৃতিক প্রবাহকে অনুসরণ করেছেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের আগে বা পরে বাঙালিদের সাংস্কৃতিক স্বরূপ অন্বেষণের ও বিকাশের নির্দিষ্ট পর্যায় আরম্ভ হয় ‘প্রগতি লেখক সংঘ’কে কেন্দ্র করে। সমাজ মানসের ঐ স্বাভাবিক গণমুখী প্রবাহকে বিপর্যস্ত করার জন্য সাম্প্রদায়িক চিন্তা অনুপ্রবেশ করে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং শক্তি বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। নির্মাণ খাতটি আবিল হয়ে পড়ে। প্রায় তিরিশ বছর ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের পর প্রগতির ধারাটি জয়যুক্ত হয়; সাথে-সাথে অনিবার্য হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। তথ্য নির্ভরতা, সহজ প্রকাশভঙ্গী, প্রাথমিক উৎস থেকে তথ্য চয়ন এবং বিশ্লেষণে দ্বান্দ্বিক পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে বর্তমান গ্রন্থটির রচনাশৈলী সমৃদ্ধ। সব বৈশিষ্ট্যের সমাহারে ‘বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলন’ একটি অসাধারণ গবেষণাকর্মে পরিণত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও গবেষক ড. সাঈদ-উর রহমানের জন্ম কুমিল্লা জেলার শিমপুর গ্রামে, ১৯৪৮ সালের ১৬ ফেব্রায়ারি। কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক (১৯৬৪), সিলেটের এমসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও এমএ যথাক্রমে ১৯৬৯ ও ১৯৭০ সালে। ১৯৭১ সাল কেটেছে যুদ্ধক্ষেত্রে, মুক্তিযোদ্ধাদের রাজনৈতিক প্রশিক্ষক হিসেবে। ১৯৭২ সালে গবেষক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগে যোগদান, ১৯৭৫ সালে প্রভাষক পদে নিযুক্তি, প্রফেসর হন ১৯৯১ সালে। ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ও ফরাসি ভাষায় ডিপ্লোমা পেয়েছেন। যথাক্রমে ১৯৭৯ ও ১৯৮২ সালে গবেষণাকর্মের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন পুরস্কার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবদুর রব চৌধুরী স্বর্ণপদক অর্জন করেন। তাঁর তত্ত্বাবধানে গবেষণা করে ১ জন পিএইচডি ও ৪ জন এমফিল ডিগ্রি পেয়েছেন।