রেশমা অনাবৃত দেহে আয়নার সামনে গিয়ে নিজেকে দেখতে পাগল। হারটা তার সৌন্দর্য যেন অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। হঠাৎ তার মনে হলো তার পিছনে কে যেন দাঁড়িয়ে আছে। মাথা ঘুরিয়ে দেখল কেউ নেই। মাথা ফিরিয়ে আয়নায় তাকিয়ে সে থ হয়ে গেল। শহীদের প্রথম স্ত্রী চন্দনা ঘোমটা। তুলে তার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে। দিনে দুপুরে এটা সম্ভব হবে। কীভাবে? রেশমা ভয়ে আর পিছনের দিকে তাকাতে সাহস। করল না। আয়নার মধ্যেই সে দেখল ঘোমটা তুলে নিল চন্দনা-তার মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে দরদর করে, এবার ভয়ে। চিৎকার দিয়ে উঠল রেশমা। পিছন ফিরে তাকালো কাঁপতে কাঁপতে। কেউ নেই, শুধু পর্দাটা বাতাসে দুলছে।
ভূতপ্রেত ওসব সব কাল্পনিক। চন্দনা বেঁচে আছে কি মরে গেছে তাও কেউ জানে না। চন্দনার অশরীরী আত্মা নয়তো? গল্পে এ ধরনের ব্যাপার থাকে। কিন্তু বাস্তবে এসব অসম্ভব। সাহস সঞ্চয় করে বিছানার পাশের বেড লাইটটা সে জ্বেলে দিল সুইচ টিপে। আলোতে ভরে গেল ঘরটা। অবাক হয়ে দেখল মহিলা মৃদু পায়ে ঘুরছে ঘরের মধ্যে। ঘোমটা নামালে মাথাটায় আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট হলো। রক্ত পড়ছে প্রচুর। একেবারে জীবন্ত। স্বপ্ন হতে পারে না। নিজের হাতে চিমটি কেটে দেখল। ব্যথা লাগছে। এবার রেশমা খুব ভয় পেল। রেশমার দিকে তাকিয়ে কী যেন বলতে চাইলো। সেই মুখ। সেই চোখ। কিন্তু চোখের দৃষ্টিতে বিষণ্ণতা এবং ক্লান্তি। রেশমা চিৎকার দিতে গেলে কোনো শব্দ বেরুল না বেশি ভয়ে...