হে ভাই, তোমার অন্তর যদি এই রামাদান মাসে উজ্জীবিত না হয়, তাহলে আর কবে হবে? আরোগ্য লাভের মাসেই যদি অন্তর সুস্থ না হয় তাহলে আর কখন সুস্থ হবে? সর্বনাশের শিকার ওই ব্যক্তি, যে ক্ষমার জমিনে অবতরণ করেছে; অথচ সেখান থেকে সামান্য অংশও উত্তোলন করতে পারেনি। হতভাগা ওই ব্যক্তি, যে ব্যবসায় লাভের মৌসুম পেয়েও জান্নাতের প্রাসাদটি কিনতে পারেনি। ক্ষতিগ্রস্ত ওই ব্যক্তি, যে রহমতের বাজারে প্রবেশ করে ঘুমিয়ে পড়েছে; অথচ সে জানে যে, মাস শেষে বাজার বন্ধ হয়ে যায়। আহা! আফসোস তার জন্য। আহা! আফসোস তার জন্য। হে ভাই, দুনিয়ার জন্য তুমি যেভাবে চিন্তা করো আখেরাত পাওয়ার জন্য কী তুমি সেভাবে চিন্তা করো? তোমার পায়ে যদি কাটা বিদ্ধ হয়, তাহলে কি তুমি ব্যথায় নির্ঘুম রাত কাটাও না? ডাক্তারের অপেক্ষায় বসে থাকো না? এগুলোও তো গোনাহ নামক কাঁটা; যা সারা বছর জুড়ে তোমার হৃদয়-মন কলুষিত করে রেখেছে। কিন্তু এক্ষেত্রে তোমার থেকে ব্যথার আওয়াজ শোনা যায় নি! তোমাকে তো কোনো সাহায্যকারী তালাশ করতে দেখা যায়নি। তোমার জন্য দুর্ভোগ, কারণ, তুমি শরীরে রোগ হলে ব্যথা পাও অথচ অন্তরে রোগ হলে ব্যথা অনুভব করো না। রামাদান হলো এক অভিজ্ঞ ও হিতাকাঙ্খী ডাক্তার, সে তোমার জন্য ওষুধ নিয়ে আসে। তুমি কিভাবে তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দাও। অথচ সে তোমার জন্য নিয়ে এসেছে শান্তির বারতা। তার আগমনে কেন তুমি তাকে স্বাগত জানাও না; অথচ তার কাছে রয়েছে ফ্রি চিকিৎসার যাবতীয় উপকরণ।
ড. খালিদ আবু শাদি খালিদ আবু শাদি মিসরের একজন প্রতিভাবান দায়ি ইলাল্লাহ। ১৯৭৩ সালের ১৮ মার্চ গারবিয়াহ প্রদেশের জিফতা নগরীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা করেন কুয়েতে। তারপর মিসরের কায়রো ইউনিভার্সিটিতে ফার্মেসি ফ্যাকাল্টি থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। শৈশব থেকেই তিনি প্রখর মেধা ও অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। কর্মজীবনের একটি বড় সময় তিনি দাওয়াহর কাজে ব্যয় করেন। লেখালেখিকেই তিনি দাওয়াহর মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন। তাঁর স্বতন্ত্র রচনাশৈলী আর হৃদয়গ্রাহী উপস্থাপনা সহজেই পাঠকদের নজর কাড়ে। মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার অদ্ভুত এক শক্তি আছে তাঁর কলমে। দাওয়াহ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় একে একে তিনি উম্মাহকে উপহার দেন ১৪টিরও বেশি মূল্যবান গ্রন্থ। ‘ইয়ানাবিউর রাজা’, ‘মাআন নাসনাউল ফাজরাল কাদিম’, ‘সাফাকাতুন রাবিহা’, ‘লাইলি বাইনাল জান্নাতি ওয়ান নার’, ‘বি-আইয়ি কালবিন নালকাহ’ ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা। এ ছাড়াও বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর অসংখ্য মূল্যবান প্রবন্ধ। কখনো বক্তৃতাকেও তিনি দাওয়াহর মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তাঁর হৃদয়-নিংড়ানো আহ্বান অসংখ্য পথহারা তরুণকে দ্বীনের পথে উঠে আসার প্রেরণা জুগিয়েছে। আমরা প্রতিভাবান এই দায়ি ইলাল্লাহর দীর্ঘ কর্মময় জীবন কামনা করি।