এক অনন্ত নক্ষত্রবীথির সামনে আমরা দাঁড়িয়ে। শূন্যে কালপুরুষের তরবারি। নীচে স্বেদ, রক্ত, শব্দগুঁড়ো, ভাসমান কাগজের স্তূপ। শব্দের শরীর এত ভাস্কর্যময় তা কি আমরা জানতাম? যেন তাদের নীল দ্যুতি আমাদের করোটি ভেদ করে চলে যাবে! ঘুমের উতরোল ঢেউ পার হয়ে বিশ্বসাহিত্যের এক গ্যালারিতে আমাদের নিয়ে হেঁটে চলেছেন লেখক। কে নেই সেখানে শিল্পসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ নক্ষত্রেরা— শেক্সপিয়র, মার্লো, পাসকাল, লা রোশফুকো, ভলতের, কোলরিজ, ভিক্তর য়্যুগো, বঙ্কিমচন্দ্র, তলস্তয়, তরু দত্ত, শোপেনহাওয়ার, নীৎশে, বোদল্যের, মালার্মে, রম্যাঁ রলাঁ, অবনীন্দ্রনাথ, মপাসাঁ, প্রুস্ত, সার্ত্র, আপোলিনের, এলিয়ট, স্যান্ডবার্গ, বেকেট, আঁরি মিশো, এল্যুয়ার, প্রেভের, জীবনানন্দ, বুদ্ধদেব বসু, সিলভিয়া প্লাথ, চ্যাপলিন, সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, অন্নদাশঙ্কর, জ্যোতিভূষণ চাকী...। আছেন স্যুররেয়ালিস্তরা, আছেন জান দ্যুভাল, আছে সমুদ্র আর অন্ধকার। এ এক অন্যরকম বই, অন্যরকম অন্বেষণ, যে-অন্বেষণ ইতিহাস খুঁড়ে খুঁড়ে হারিয়ে যাওয়া মানুষের কণ্ঠস্বর খোঁজে। ফলে নিষ্প্রাণ জ্ঞানবস্তুর গায়ে লাগে সাতরঙা আলো। আমাদের ক্রমক্ষীয়মাণ মনীষার জগতে এই বই এক অন্যরকম সংবেদী সংযোজন।
চিন্ময় গুহ-র জন্ম ১৯৫৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর কলকাতায়। প্রাবন্ধিক, ফরাসিবিদ ও অনুবাদক। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য। ফরাসি শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রক তাঁকে আলাদাভাবে দু’বার ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত করেন ২০১০ এবং ২০১৩ সালে। শিক্ষা জগদ্বন্ধু ইনস্টিটিউশন, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে পিএইচ ডি। দিল্লির ফরাসি দূতাবাসের প্রাক্তন প্রকাশনা-উপদেষ্টা। ‘দেশ” পত্রিকার গ্রন্থ-সমালোচনা বিভাগের দায়িত্ব পালন করেছেন এক দশক। গবেষণা করেছেন প্যারিস, অক্সফোর্ড ও কেম্ব্রিজে। বক্তৃতা ও সভাপতিত্বের জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন সরবন, অক্সফোর্ড, এডিনবরা সহ নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁর ফরাসির ভক্ত স্বয়ং দেরিদা। চারটি ভাষায় কুড়িটির বেশি বই। শখ: ফরাসি অভিধান পড়া, প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটানো।