"চিলেকোঠার উদ্মাদিনী" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: নদীর মতাে এক নারী, যে জলের মতাে ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়। নাম তার ভিভিয়েন। স্বামী টি. এস. এলিয়টের বন্ধুরা তাকে বলত দি রিভার গার্ল। কেউ তাকে ভালবাসেনি, তাঁকে নিয়ে নাসিকা কুঞ্চন করেছেন ভার্জিনিয়া উলফ। সাহিত্যের ইতিহাসে তিনি চিরকালের মতাে চিহ্নিত হয়ে গেছেন চিলেকোঠার উন্মাদিনী হিসেবে। ভিভিয়েন সম্পর্কে সাম্প্রতিকতম আবিষ্কার এলিয়ট ও তার কবিতাকে নতুনভাবে দেখতে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে এখানে সংযােজিত হয়েছে এযাবৎ অপ্রকাশিত তার ডায়েরির অংশ। এলিয়টের কবিতা নিয়ে লেখকের ইংরেজি বইটি সারা পৃথিবীতে সাড়া জাগিয়েছিল। সহজ বাংলায় সেইসব গবেষণার ফসল এবার পাঠকের কাছে উপস্থাপিত হল। এই বইতে আরও আছে এক বিশিষ্ট ফরাসিবিদের লেখা নানা মূল্যবান প্রবন্ধ, যেগুলির বিষয় সতেরাে শতকের ফরাসি ভাবুক লা রােশফুকো থেকে উনিশ শতকের এক অত্যাশ্চর্য ফরাসি অভিধান মূঢ়তার বিশ্বকোষ; এক অজানা ফরাসি যুবকের লেখা প্রথম ফরাসি বাংলা শব্দকোষ (১৭৮৫); রম্যাঁ রলাঁ ও ভারতবর্ষের স্বপ্নিল সংলাপ। আছে আত্মহত্যার ইতিহাস নিয়ে এক পশ্চিমি গবেষণার অনবদ্য মূল্যায়ন। আর রয়েছে মালার্মে, র্যাদা, আঁরি মিশাে, অন্নদাশংকর, সাত্র, বেকেট ও জঁ আনুই নিয়ে নতুন ভাবনা উসকে দেওয়া কয়েকটি রচনা। রয়েছে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে কালিদাস নাগকে লেখা রম্যাঁ রলাঁর একটি অতি ব্যক্তিগত ও বিস্ফোরক চিঠির বাংলা অনুবাদ। চুরমার হতে থাকা আজকের পৃথিবীতে এই প্রবন্ধগুলির মধ্যে হয়তাে এক গােপন অন্তঃসূত্র পাওয়া যাবে।
চিন্ময় গুহ-র জন্ম ১৯৫৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর কলকাতায়। প্রাবন্ধিক, ফরাসিবিদ ও অনুবাদক। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য। ফরাসি শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রক তাঁকে আলাদাভাবে দু’বার ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত করেন ২০১০ এবং ২০১৩ সালে। শিক্ষা জগদ্বন্ধু ইনস্টিটিউশন, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে পিএইচ ডি। দিল্লির ফরাসি দূতাবাসের প্রাক্তন প্রকাশনা-উপদেষ্টা। ‘দেশ” পত্রিকার গ্রন্থ-সমালোচনা বিভাগের দায়িত্ব পালন করেছেন এক দশক। গবেষণা করেছেন প্যারিস, অক্সফোর্ড ও কেম্ব্রিজে। বক্তৃতা ও সভাপতিত্বের জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন সরবন, অক্সফোর্ড, এডিনবরা সহ নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁর ফরাসির ভক্ত স্বয়ং দেরিদা। চারটি ভাষায় কুড়িটির বেশি বই। শখ: ফরাসি অভিধান পড়া, প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটানো।