‘বঙ্গবন্ধুর হাত আজও আমার হাতে লেগে আছে’ এটি একটি স্মৃতিচারণমূলক গ্রš’। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তাঁর জীবন বিশাল কমের্র ধারক এবং বাহক। বাংলার মানুেষর অধিকার আদায় ছিল তাঁর জীবনে ধ্যান-জ্ঞান। বাঙালির কৃষ্টি, সভ্যতা, ইতিহাস ঐতিহ্যের আবাস¯’ল ছিল তাঁর হৃদয়। তাই অধিকারহারা বাঙালির বিবর্ণমখু াবয়ব, বঞ্চিতের চোখের জল, ভখূ ানাঙ্গা মানুেষর জরাজীর্ণ দেহগুলো তাঁকে সর্বদাই ব্যথিত ও ব্যতিব্যস্তকরে তুলতো। বাংলা এবং বাঙালির প্রতি তাঁর প্রগাঢ় ভালোবাসার জন্যই জীবনের সকল সুখ-স্বা”ছন্দ্যকে বিসর্জন দিয়ে মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াই করেছেন আর এই লড়াই করতে গিয়ে তাঁকে বারবার জেলে যেতে হয়েছে। জীবনের মূল্যবান সময়টুকুজেলের অভ্যন্তরেই কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। জাতীয় সংসদে মহামান্য রাষ্টপ্র তির ভাষণের উপর আলোচনাকালে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বঙ্গবন্ধুর কারাবাসের তথ্য তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুজাতির জন্য ৪৬৭৫ দিন জেলের অভ্যন্তরে কাটিয়েছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন। তিনি বিশ^াস করতেন, একমাত্র আদর্শভিত্তিক একটি রাজনৈতিক সংগঠন সঠিক নেতৃত্বপেলে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে। তাই তিনি আওয়ামী লীগকে সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে গিয়েছেন অকুতোভয়ে। কখনো কখনো দুর্বার গতিতে সাংগঠনিক শক্তি সঞ্চয়ের জন্য ছুটে বেড়িয়েছেন দেশের এক প্রান্তথেকে অপর প্রান্তে। তাঁর চলার পথে তিনি কত মানুষের দেখা পেয়েছেন, কত হৃদয়ের ভালোবাসা পেয়েছেন, কত দুঃখী মানুষের কত আশির্বাদ পেয়েছেন তার হিসেব করা কারো পক্ষে স¤ব¢ নয়। এত আশির্বাদ ভালোবাসা পেয়েছিলেন বলেই তিনি শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধুঅভিধায় অভিসিক্ত হয়েছিলেন। আমি একজন সামান্য রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে কখনো কখনো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে, হাত মেলানোর সুযোগ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে স্বল্প সময়ের দেখা সাক্ষাতের ছোট ছোট স্মৃিতগুলো এখনো আমার চোখে জল্ব জল্ব করে ভেসে ওঠে। এই স্মৃতিগুলো মুছে যাওয়ার নয়। মুছে দিতেও চাই না। তাই এই স্মৃতিগুলোকে একটি বইয়ের পাতায় আবদ্ধ করে আপনাদের হাতে তুলে দিলাম। মো. নুরুল ইসলাম রামনগর, নেত্রকোণা
মো. নুরুল ইসলাম, ১৯৪৬ সালের ৩ মার্চ নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা: এলিম উদ্দিন এবং মাতা: আয়শা খাতুন। স্কুলের ম্যাগাজিনে লেখার মধ্য দিয়ে লেখালেখি শুরু। ষাটের দশকে নেত্রকোণা থেকে প্রকাশিত পাক্ষিক পত্রিকা “উত্তর- আকাশে”-র একজন নিয়মিত লেখক ছিলেন তিনি। লোক সাহিত্যেই তার কাজের প্রধান ক্ষেত্র । এক সময় জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি একজন সফল মুক্তিযোদ্ধা। একই সাথে বলিষ্ঠ সংগঠকও। এছাড়া স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় নেত্রকোণার ছাত্রলীগের মিছিলে তিতাস নামে এক ছাত্রলীগের এক কর্মী নির্মমভাবে নিহত হলে তাকে কেন্দ্র করে “আন্দোলনের একটি নাম তিতাস" শিরোনামে একটি গীতি-নকশা রচনা করেন এবং পরবর্তীতে ক্যাসেট আকারে প্রকাশিত হলে ব্যাপকভাবে পাঠক মহলে সমাদৃত ও আলোচিত হয়। বাংলাদেশ বেতারের নিয়মিত তালিকভুক্ত গীতিকার। উল্লেখ্য লিখিত “বীরঙ্গনা সখিনা নাটক” এবং “মুক্তিযুদ্ধে কেন্দুয়া” নামে দুটি বই ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। নেত্রকোণা বাউলদের আঁতুরঘর। এখানেই তার জন্ম। শিশুকাল থেকেই বেড়ে উঠেছেন বাউলদের সান্নিধ্যে। সে থেকেই তার চিন্তা চেতনায় সবসময় বিরাজমান বাউণসমাজ। এরই ধারাবাহিকতার ফসল “নেত্রকোণা বাউলা গান”। এক মেয়ে ও চার ছেলে সন্তানের জনক। তিনি একজন সদালাপী ও পরপোকারী মানুষ হিসেবে সামাজিক নানান কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন।