প্রথম পর্ব আনমনেই অগ্নির দিকে চেয়ে ছিলেন বৈশম্পায়ন। এ অগ্নি এমন এক বিষয়, যা ছাড়া মানবজীবন অচল। আশ্রমে তাঁর গৃহাগ্নির দিকেই চেয়ে ছিলেন তিনি। আচার্য কৃষ্ণদ্বৈপায়নের আশ্রমে শিষ্য সংখ্যা কম নয়। আচার্য, তাঁর প্রধান শিষ্যদের মধ্যে নবীন শিষ্যদের শিক্ষাদানের অধিকার ভাগ করে দিয়েছেন। বৈশম্পায়নের ভাগে যে-সকল শিষ্য তাঁদের তিনি শিক্ষাদান করছিলেন কিছুক্ষণ আগে অবধিও। সন্ধ্যাকাল আসন্ন হতে তিনি গার্হপত্য অগ্নিশালার নিকটস্থ আসন ত্যাগ করে তাঁর আশ্রম গৃহে উপস্থিত হয়েছেন। মন অস্থির। তাঁর গৃহে প্রবেশকালে গৃহাগ্নিতে নিজেই কাষ্ঠদান করলেন। আজ তিনি আশ্রমের অগ্নিশালায় অগ্নিহোত্র করবেন না। তাঁর মন অস্থির। অন্যে সে দায়িত্ব নিয়েছে। অগ্নিহোত্র সকলে করার অধিকারী নয়। সচরাচর বিবাহিত গৃহস্থই আহিতাি হয়ে থাকেন। অর্থাৎ তাঁদেরই অধিকার আছে অগ্নিশালায় গার্হপত্য, আহবনীয় এবং দক্ষিণাগ্নি স্থাপন করার। যখন অগ্নিশালা প্রস্তুত হয় তখন তাতে চতুষ্কোণ বেদি নির্মাণ করে তার তিনদিকে এই তিন অগ্নি স্থাপিত হয়। পশ্চিমে গার্হপত্য, পূর্বে দেবতাদের উদ্দেশে নিবেদনের জন্য আহবনীয় এবং দক্ষিণে যমের অধীন পিতৃগণের উদ্দেশে নিবেদনের জন্য দক্ষিণাগ্নির ক্ষেত্র স্থাপিত হয়। গার্হপত্য চতুর্ভুজ, আহবনীয় বৃত্তাকার এবং দক্ষিণাগ্নির অর্ধ-বৃত্তাকার ক্ষেত্র। তিন ক্ষেত্রেরই ক্ষেত্রফল সমান হতে হয়। সেই ক্ষেত্রে প্রাতঃকালে এবং সন্ধ্যাসময় অগ্নিহোত্র চলে। অগ্নিহোত্র সম্পাদনের জন্য গৃহস্থ ঘরে একটি গাভী থাকে। এই আশ্রমেও আছে। সেই গাভীকে বলে অগ্নিহোত্রী গাভী। প্রাতে এবং সন্ধ্যায় সেই গাভীর দুগ্ধ মালসায় করে গার্হপত্য অগ্নিতে তপ্ত করতে হয়। দুটি হাতার প্রয়োজন। একটি ছোটো হাতা। যার নাম সুবা। অন্যটি বড়ো। তার নামও বড়ো। অগ্নিহোত্রহবনী। মালসার দুধ প্রথমে সুবা দিয়ে তুলে ঢালতে হবে