মহাগ্রন্থ আল-কোরআন নিঃসন্দেহে আল্লাহর প্রেরিত ঐশী গ্রন্থ। বিশ্ব প্রতিপালক, সৃষ্টিকর্তা, সার্বভৌমত্ব সব তার এ অতুলনীয় অনুগ্রহ। এর স্বয়ং যেমন আল্লাহ তা’আলা তেমনি কোরআন নাম যে নামকরণ করেছেন সেটিও তিনি মহান রাব্বুল আলামীন।
এই পবিত্র গ্রন্থ সর্বশেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতি অবতীর্ণ করে মানুষকে অফুরন্ত দয়া ও অনুগ্রহ করেছেন। কোরআন আরবী অঞ্চলের আরবী ভাষায় রচিত এ কথাও বলেছেন- কোরআন কেবল আরবদের অনুকরণীয় নয়, মহাগ্রন্থ আল কোরআন সমগ্র মানব জাতির জন্য উপদেশ গ্রন্থ।
এটি গোটা বিশ্ব মানবজাতির কল্যাণের জন্য। মহান আল্লাহপাক আরো বলেছেন, আমি কোরআন নাযিল করেছি এবং স্বয়ং আমিই এর সংরক্ষণকারী, ১৫ সূরা হিজর ১৫: ৯।
পৃথিবীর শেষ দিন অর্থাৎ কিয়ামত পর্যন্ত এটি অবিকৃত অবস্থায় বহাল থাকবে মানুষের পথ প্রদর্শনের জন্য। পবিত্র আল কোরআন মহান আল্লাহ পাকের প্রশংসা দিয়ে শুরু আর তিনিই বলেছেন--- পৃথিবীতে যত বৃক্ষ আছে, সব যদি কলম হয় আর যত সমুদ্র আছে তার সাথে যদি আরও সাত সমুদ্র যুক্ত হয়ে কালি হয়, তবু তাঁর বাণী লিখে শেষ করা যাবে না।
যুগে যুগে মহান আল্লাহ পৃথিবীতে নবী-রাসূলদের প্রেরণ করেছেন মানুষকে হিদায়েত ও সতর্ক করে দেওয়ার জন্য।
মহান আল্লাহ পাক হযরত আদম (আ.) কে সৃষ্টি করেছেন খলিফারূপে এবং নবী-রাসূলদের উপর আসমানী সহিফা ও কিতাব নাযিল করেছেন। তেমনিভাবে শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বিদায় হজের সময় সকল মানুষের উদ্দেশ্যে অসিয়ত করেন। আমি অবশ্যই তোমাদের মাঝে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি, যদি তোমরা তা আঁকড়ে থাক তবে কোনদিনই বিপথগামী হবে না। তাহলো মহান আল্লাহর কিতাব আল কোরআন আর আমার সুন্নাহ (হাদীস)।
আল্লাহর অশেষ রহমতে একজন সামান্য খাদেম হিসেবে দীর্ঘ দুই দশক এর ওপর কোরআন গবেষণা ও চর্চা চালিয়ে যাই এবং অদ্যবধি চর্চা বিদ্যমান রয়েছে।
কোরআনের ওপর গবেষণা, চর্চা এবং চিন্তাগুলো পর্যালোচনা করে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়গুলো পবিত্র আল কোরআনের কোন সূরায় কোন আয়াত এসব বর্ণনায় এসেছে সেটিই আমি এ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করার চেষ্টা করেছি মাত্র।
এই হৃদয় স্পর্শ করার মত এক অভূত অনুভূতি ব্যক্ত করার মত যা এক কথা ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন এবং দুরূহ। এটি ঈমানদার, মুত্তাকী, মুমিন, মোহসিন এক কথায় মুসলমান ও অমুসলিম ভাই-বোনদের জন্য তুলে ধরার আপ্রাণ প্রয়াস চালিয়ে গেছি।
এখানে আমার কোনো কৃতিত্ব নেই। সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির জন্য। বইটিতে যেহেতু কোরআনের উপদেশ, আদেশ, নিষেধ, দৃষ্টান্ত, উদাহরণ, সতর্কতা, হালাল, হারাম, পুরস্কার, শাস্তির আলোচনা স্থান পেয়েছে।
এটি মানবজাতির জন্য এক বিস্ময়কর গ্রন্থ। সেজন্য এর নামকরণ করেছি “কোরআন কারীমের বিস্ময়কর বাণী”। কারণ বাণীগুলো আল্লাহ তা’আলা, আল-কোরআনের অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতির কথা বিভিন্ন আয়াতে এসেছে। গ্রন্থটি প্রকাশ করতে পেরে মহান আল্লাহর নিকট অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আলহামদুলিল্লাহ।
আমি কোনো ইসলামী চিন্তাবিদ, প-িত ব্যক্তি মুদ্দাসির বা বিশেষজ্ঞ নই। ইসলামের একজন সামান্য অনুরাগী ও অনুসারী হিসেবে বইটি লিপিবদ্ধ ও অবতারণা। অজ্ঞতার কারণে ভুল-ত্রুটি থাকতেই পারে, স্বীকার করতে দ্বিধাবোধ করছি না।
এজন্য সুধী পাঠকবৃন্দকে অবশ্যই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি এবং গ্রন্থটি ভবিষ্যতে সংস্কারের মাধ্যমে সংশোধন করার স্বার্থে প্রয়োজনীয় পরামর্শ কামনা করছি।
বইটি কম্পোজ করেছেন মোঃ আবু সাদাত (নাহিদ), বইটি প্রুফের কাজ করছেন গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদ ও ঈদগাহ সোসাইটির হাফেজ ঈমাম ফাহিমুর রহমান এবং বইটির প্রকাশক সাঈদ বারী। তাদের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি। তার নিকট আমি ঋণী। গ্রন্থ থেকে সুধীবৃন্দ সামান্য জ্ঞান আহরণ করে নিজের জীবন ও অন্য ভাইকে পড়ার পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে কাল কিয়ামতের মাঠে আখিরাতের সময় আল্লাহ উত্তম পুরস্কারে ভূষিত করবেন বলে দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি, ইনশাআল্লাহ। তাহলেই কেবল আমার মেধা, শ্রম, চেষ্টা, সফল ও সার্থক হবে। সবার জন্য দো’আ ও মঙ্গল কামনায়। আমীন! মোহাম্মদ শামসুল কবির লেখক ও গবেষক
মােহাম্মদ শামসুল কবির এর জন্ম বগুড়ায়। তিনি বগুড়া সরকারি আযিযুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক (বি.এসসি)। পেশাগত জীবনে তিনি কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভাট বিভাগে চাকুরীরত। বর্তমানে কাস্টম হাউস, আই সি ডি কমলাপুর । ঢাকায় রাজস্ব কর্মকর্তা (সুপারিনটেনডেন্ট) হিসাবে কর্মরত। লেখালেখি দুই দশক ধরে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, আঞ্চলিক, লিটল ম্যাগাজিন ও বিভাগীয় ম্যাগাজিনে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে নিয়মিত কলাম ও প্রবন্ধ লিখে যাচ্ছেন। বিচিত্র ভাবনা, সংস্কৃতি ও সাহিত্য চেতনা ২০০০ সালে, প্রকাশিত তার প্রথম প্রবন্ধ গ্রন্থ চেতনায় বাংলাদেশ ও বিশ্ব ২০০৪ সালে, সম্প্রীতির সংকট ও সমকালীন প্রসঙ্গ, ২০০৬, দু'শাে বছরের নির্বাচিত প্রবন্ধ ২০০৭, প্রগতি ও বিধ্বস্ত মানবতা ২০০৯ এবং স্মরণীয় মানুষ ও বিবিধ প্রবন্ধ ২০১১, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট ২০১৪। উল্লেখ্য দু'শাে বছরের নির্বাচিত প্রবন্ধটি সম্পাদনা করেছেন যা বােদ্ধা পাঠক মহলে যথেষ্ট সমাদৃত হয়েছে। পুরস্কার : বাংলাদেশ রাইটার্স ফাউন্ডেশন প্রবন্ধ সাহিত্যে অ্যাওয়ার্ড-২০০৫। বগুড়া লেখক চক্র বাংলা গদ্য সাহিত্য-২০০৬ ও আলাের পথে প্রাবন্ধিক ও লেখক, চট্টগ্রাম-২০১০ সালে পুরস্কৃত হন। শখ : পড়াশােনা, লেখালেখি ও ভ্রমণ। প্রিয় খেলা : ফুটবল। ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী নাজরিনা কবির গৃহিণী। তিনি এক মেয়ে ও এক ছেলের জনক।