মহান আল্লাহ মানবজাতিকে সুন্দর আকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। সমগ্র সৃষ্টিজগতের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দিয়েছেন। আমাদের জীবনের প্রতিটি কথা ও কাজের হিসাব সংরক্ষণের জন্য সম্মানিত লেখক (ফেরেশতা) নিয়োজিত আছেন, পৃথিবীর কেউ না দেখলেও আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে ঠিকই প্রত্যক্ষ করছেন। অনুবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমেও যা ধরা যায় না, আল্লাহর কাছে তা গোপন থাকে না। কারণ, তিনি দেখেন, জানেন ও শুনেন। এ ধরনের ঈমানের বাস্তব প্রতিফলনের নাম তাক্বওয়া।
এটাই প্রত্যেক মুমিনের প্রকৃত চেতনা হওয়া উচিৎ। সৈয়দ, পাটোয়ারী, মজুমদার, খান, মীর, ভূঞা, চৌধুরী, ধাই, ধোপা, কুলি, মজুর ইত্যাদি আশরাফ ও আতরাফের মানদন্ড- নয়, বরং তাক্বওয়াই সব মর্যাদা ও কল্যাণের একমাত্র মানদন্ড-। তাক্বওয়া এমন একটি গুণের নাম, যার মধ্যে মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের সব মর্যাদা নিহিত। তাক্বওয়াহীন ব্যক্তি তিনি যেই হোক না কেন, তাকে সম্মানিত বলা যাবে না।
অত্র গ্রন্থে লেখক তাক্বওয়া সম্পর্কে সবিস্তার আলোচনা করেছেন। বর্ণনার প্রতিটি পর্বে তিনি সামর্থ্য মতো তথ্য-উপাত্ত পরিবেশন করেছেন, সাথে সাথে রেফারেন্সও যুক্ত করেছেন। আমরা আশা করি, সুধী পাঠকবৃন্দ এর থেকে উপকৃত হবেন, ইনশাআল্লাহ।
ড. মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। ১৯৭৬ সালের ১ নভেম্বর, সোমবার ফেনী জেলার ইজ্জতপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম, মো: ছাদেক বিন সেকান্দার এবং মাতার নাম, হোসনেয়ারা বেগম মুক্তা বিনতে আব্দুল খালেক। ইজ্জতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করে স্থানীয় দাইয়াবিবি আজিমিয়া ইসলামিয়া মাদরাসা থেকে দাখিল পাস করেন। পরবর্তীতে উচ্চতর পড়াশুনার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আগমন করেন এবং কৃতিত্বের সাথে আলিম, ফাযিল ও কামিল পাস করেন। ২০০২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগ থেকে বিএ (অনার্স) ও ২০০৩ সালে প্রথম শ্রেণিতে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পারিবারিক দীনী-ইল্মি পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন এই লেখক। আনুষ্ঠানিক একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি আত্মনিয়োগ করেন লেখা-লেখিতে। গড়ে তোলেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, পাঠাগার। পেশাগত জীবনের ব্যস্ততার মাঝেও তিনি একজন লেখক, গবেষক, সমাজে পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের পড়া-লেখার বৃত্তি প্রদান, সামাজিক, শিক্ষা-সাংস্কৃতিক ও ব্যবসার উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছেন। লেখক দীর্ঘ প্রায় দু’যুগ ধরে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, স্মারক, স্মরণিকায় নিয়মিত লেখা ও সম্পাদনা করে আসছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত বই হলো, ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি, ইসলাম বনাম পাশ্চাত্য সংস্কৃতি, তাকওয়া মু’মিন জীবনের ভূষণ, ইসলামী আন্দোলন: শরয়ী মর্যাদা, ইসলামী আন্দোলনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি এবং তার পিএইচ-ডি থিসিস ‘মাওলানা মমতাজ উদ্দীন আহ্মাদের আরবি ও বাংলা ভাষায় সাহিত্য চর্চা’ পা-ুলিপি প্রকাশের অপেক্ষায়। তিনি শিক্ষা ও ব্যবসায়িক কাজে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ আইকাব-২০০৯, এইচ.বি.আর.আই-২০১২, রিহ্যাব-২০১৪, ওআই.সি-এসি.এফ-২০১৭, হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী স্মৃতি সম্মাননা-২০১৭ এর পদক ও সম্মাননা পত্রে ভূষিত হন। তার সহধর্মিণীর নাম নাহিদ আঞ্জুম নাবিলা। তিনি তিন সন্তানের জনক।