বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ হতে পত্রিকায় 'পাত্রী চাই' বিজ্ঞাপনটি দেখে কাশেম সাহেব ঘড়ি দেখলেন, ন'টা বাজতে দশ মিনিট বাকি। ফোন করার জন্যে পারফেক্ট টাইম। কিন্তু এসময় ফোন করলে টিভির খবরটা মিস হবে। কাশেম সাহেব সোফা থেকে উঠে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন। দেখলেন আয়নায় তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছে সত্তর বছরের এক যুবক। মাথায় ঘন কালো চুল। ঝকঝকে দাঁত এবং সুঠাম দেহ। নিজের দিকে তাকিয়ে মনে মনে তিনি খুশিই হলেন। একটা খুঁত অবশ্য আছে-গলার দিকটার চামড়া দিন দিন কুঁচকে যাচ্ছে। পাত্র হিসেবে তাকে যদি রিজেক্ট করা হয়, তাহলে একমাত্র গলার ভাঁজের কারণেই করা হবে। কাশেম নিজের জীবন নিজের মতো করে চালিয়ে নিতে চান। ব্যবসা, সম্পদ ছেলেদের যা যা দেওয়ার তিনি দিয়ে দিয়েছেন। যদিও এখনো সবাই এই এজমালি চার তলা বাড়িতে একেকটা ফ্লোর নিয়ে থাকে। বাড়িটি কাশেমের স্ত্রীর নামে। নিচতলাটা নিজের জন্যে রেখে বাকি তিন তলা তিনি ছেলেমেয়ের জন্যে ছেড়ে দিয়েছেন। ছেলেমেয়েরা এখন আর তাঁর খোঁজখবর বিশেষ নেয় না। কিন্তু ৩৭ বছর বয়সের এক ডিভোর্সি নারীর পাণি গ্রহণ করা কি তাঁর জন্যে সঙ্গত হবে? অলমোস্ট ডাবল বয়সের একজন মানুষকে সে কি পছন্দ করবে? সেই নারী যদি তাকে পছন্দ করে ফেলে এবং সে যদি বলে, কাশেমকে বাংলাদেশ ছেড়ে কানাডায় বসবাস করতে হবে, তখন কী হবে? এই ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি ছেড়ে তিনি কি শীতের দেশে গিয়ে থাকতে পারবেন? মনে সাহস সঞ্চয় করে কাশেম পরদিন সন্ধ্যায় বিজ্ঞাপনে দেওয়া সেই নম্বরে কল করে বসলেন। ফোনের ওপর প্রান্তে এক কিন্নরকণ্ঠী বলল, হ্যালো কে বলছেন? আমি কাছেম কইতাছি...
জন্ম ১৯৬৮ সালের ৬ জানুয়ারি, বাংলাদেশের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। স্বপ্ন আর সঙ্গতির সংঘাতে বেড়ে ওঠা। ১৯৯৪ সাল থেকে সিঙ্গাপুরে বসবাস। শিল্প-সাহিত্যের প্রতি আজন্ম অনুরাগ। দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, অনলাইন প্লাটফর্মে নিয়মিত লিখছেন—কখনাে। গল্প, কখনাে ভ্রমণকাহিনি। পছন্দ : বইপড়া, আড্ডা, ভ্রমণ এবং গান । অপছন্দ : মৌলবাদ আর কানে খাটো মানুষ। প্রকাশিত গ্রন্থ— সন্ধ্যার মেঘমালাপ (অন্যপ্রকাশ), পথে যেতে ডেকেছিলে (অন্যপ্রকাশ), পরানে বাজে বাঁশি (অন্যপ্রকাশ), আকাশের আড়ালে আকাশ। (অন্যপ্রকাশ), পুতুলের সংসার (অন্যপ্রকাশ), পথে যেতে ডেকেছিলে (অন্যপ্রকাশ), ওল্ড ফুলস ক্লাব (অবসর প্রকাশনী), দ্যা সানবার্ড (পাঞ্জেরি প্রকাশনী)।