শফিক হাসান সময়ের একজন প্রতিনিধিত্বশীল কবি। তিনি লেখেন কম কিন্তু তার কবিতায় উঠে আসে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের টানাপোড়েন, আত্মশ্লাঘা, দুঃখ-জরা-যান্ত্রণা-লাঞ্ছনা-বঞ্চনা। বারংবার এইসব বাস্তবতার ঘোড়া বা অতিবাস্তবতা মানুষের জীবনে হাজির হয় নানা রঙে, নানা ঢঙে। কবি কবিতায় কোনো শঠতার আশ্রয় নিয়ে মিথ্যা বা অসত্যের ডামাডোল বাজিয়ে কবিতাকে মূর্তিমান করতে আসেননি। কারণ তার কবিতা ক্ষণিক খেয়ালের ফসল নয়Ñ এটা জীবন পোড়ানো গল্পের সারাৎসার। চোখের সামনে যা-কিছু দৃশ্যমান সেগুলোকেই তিনি কবিতায় রূপায়িত করেন। প্রেম-ভালোবাসার গোঁজামিলে কবি জীবনের অন্তঃসারশূন্যতাকে ঢেকে রাখার বাহানা করেন না। কবি যে সময়কে দেখেনÑ সেই সময়ের অনুভূতি কবির অভিজ্ঞতাকে আরও পাকাপক্ত করে দেয়। তিনি নিজে নিজে কবিতায় এক নিস্তব্ধ আলো-ছায়া তৈরি করে কবিতাকে করে তোলেন নিজস্ব বয়ানী গল্পের অন্তর্ধ্যান। অথচ তিনি নিজের মধ্যে এক ধরনের ঘোরকে লালন করে কবিতাকে করে তোলেন তীক্ষè ও ধারালো। কবির কবিতার ভাষা সহজ-সরল হলেও তিনি টুইস্ট বা উইট ব্যবহার করে সত্যকে একটু বক্রতার মাধ্যমে বলতেই পছন্দ করেন। নিজের বোধ ও বোধির আলোকে দেখাতে চান সমাজকে, বলতে চান মানুষের কথা। শফিক হাসানের কবিতায় শব্দচয়ন যেন অবলীলায় কবির মন ও মগজে লুটোপুটি খায় এ কথা বলতেই পারি। স্মৃতিমন্থনেও কবি সিদ্ধহস্তÑ তার কবিতার উপমা-উৎপ্রেক্ষায় নির্দেশ করে নিজস্ব গতিপথ। তিনি কবিতাকে কোনো নির্দিষ্ট ফ্রেমের মধ্যে আঁটোসাঁটো করে আটকে রাখতে চান নাÑ তার কবিতা মানেই আমাদের তীব্র সমাজবাস্তবতা এবং মানুষের অবয়ব। বঙ্গ রাখাল কবি ও গবেষক
জন্ম : ০২ জানুয়ারি, ১৯৮৩-তিতাহাজরা, বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী। বেড়ে ওঠা পাহাড়তলী, চট্টগ্রামে। লেখাজোখার প্রতি আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। প্রথম লেখা ছাপা হয় মাসিক রহস্যপত্রিকায়। ২০০০ সালের মাঝামাঝি লেখালেখিতে সচেতনভাবে মনোযোগী হন। তার লেখা প্রকাশিত হতে থাকে দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিকসহ অজস্র পত্রপত্রিকায়। সমানতালে লিখেছেন লিটল ম্যাগাজিনেও। পাশাপাশি দীর্ঘদিন যাবত সম্পাদনা করছেন পাঠকপ্রিয় লিটল ম্যাগাজিন ‘প্রকাশ’। গল্প লিখতে এবং গল্পকার পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সিরিয়াস লেখার পাশাপাশি রম্য ধাঁচের রচনায়ও মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। দৈনিক প্রথম আলোর তুমুল জনপ্রিয় ফান ম্যাগাজিন আলপিন-এর মাধ্যমে রম্য লেখার সূচনা। এরপর থেকে লিখেছেন দৈনিক পত্রিকার ক্রোড়পত্র হিসেবে প্রকাশিত বিভিন্ন রম্য-বিদ্রুপ সাময়িকীতে। পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন পাণ্ডুলিপি সম্পাদনা, লেখালেখি এবং সাংবাদিকতাকে। বর্তমানে একটি জাতীয় দৈনিকে সাব এডিটর পদে কর্মরত।