নিসর্গচেতনা একজন কবির মননসঞ্জাত অনুভব। পাহাড়- সমতল, নদী-সমুদ্র, বিল-হাওড়, হ্রদ-জলপ্রপাত কবিচিত্তে সুর, রং আর সৌন্দর্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। দেহ এবং দেহাতীত চেতনার শিল্পরস-জড়িত বোধ ও অনুভব কবিতার পেলব ছোঁয়ায় প্রাণবন্ত রূপ ধারণ করে। আর এই দৃষ্টি ও সৃষ্টির বৈভব নিয়ে হেলাল চৌধুরীর কাব্যযাত্রা জীবনের পথে, জল-জোছনার ছায়ায় আবর্তিত হয় আবার কখনও বোধের বৃষ্টিতে তাঁর কবিতাযাপন দর্শনপ্রস্থানে স্থিরতা লাভ করে। হেলাল চৌধুরীর প্রথম কাব্য-প্রয়াস ইলার শিসে ভাঙে ঘুম চুয়াল্লিশটি কবিতার সমষ্টি। মিথ-পুরাণ, পূর্ব-পশ্চিম সাহিত্যরীতির সঙ্গে ব্যক্তি-অনুভূতির সূক্ষ্মতর ব্যঞ্জনা প্রকৃতি-নির্ভরতায় এ কাব্যে ফুটে উঠেছে। ইলাসত্তার দেহাতীত সৌন্দর্য আর মানবী রূপকল্প কবির কাব্যযাত্রায় অনুঘটকসূত্র হিসেবে চিহ্নিত। তাঁর স্মৃতিসত্তাজুড়ে দেখা না-দেখা, উপস্থিতি-অনুপস্থিতি, প্রেম-অপ্রেম, দিন-রাত, আলো-অন্ধকার, সকাল-বিকাল, রূপ-অরূপ, অস্তি-নেতি, অস্তিত্ব-অনস্তিত্ব ইত্যাকার শব্দবন্ধ খেলা করে। আর দ্বান্দ্বিকসূত্রে দ্বিতীয়াংশের প্রতি কবির প্রবল ঝোঁক। অর্থাৎ শূন্যায়তনে বা অদৃশ্যলোকে প্রিয়সত্তার অনুভব হেলালকাব্যের মুখ্য সুর। আবুল ফতেহ ফাত্তাহ
হেলাল চৌধুরীর জন্ম ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭০, বাবার কর্মস্থল সিলেটের বিশ্বনাথে। পৈতৃক নিবাস সিলেটের জৈন্তাপুরে। বাবা আতাউর রহমান চৌধুরী, মা ফাতেমা বেগম চৌধুরী। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি সপ্তম। জীবনসঙ্গী আফসানা বেগম চৌধুরী। একমাত্র সন্তান আরিহা আইভি চৌধুরী ফ্লরিন। হেলাল চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাঙলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। শিক্ষকতা করছেন জনতা কলেজ মইনপুর, ছাতক, সুনামগঞ্জে। বসবাস সিলেটনগরে। সম্পাদনা করছেন সাহিত্যের ছোটোকাগজ ফিনিক। প্রকাশিত কবিতার বই ইলার শিসে ভাঙে ঘুম (নভেম্বর, ২০২২)।