বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় গণচীন অন্যতম একটি পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। রাজনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরই দেশটির অবস্থান। এ দেশটি সম্পর্কে জানার কৌতূহল বাঙালি সমাজে বহুদিনের। দেশটির উন্নয়ন, সমাজ, সংস্কৃতি, রাজনৈতিক ব্যবস্থাসহ নানা বিষয় নিয়ে রয়েছে নানা ধরনের প্রচার, মিথ বা কল্পকাহিনী। ভ্রমণ কাহিনীর পাশাপাশি এসব বিষয়ে কিঞ্চিৎ ধারণা দেয়ার চেষ্টা রয়েছে বইটিতে। চীন ইন্টারন্যাশনাল প্রেস এন্ড কমিউনিকেশন সেন্টার-সিআইপিসিসি প্রোগ্রামের অধীনে দীর্ঘ ১৭১ দিন অবস্থানের মাধ্যমে চীনের নানা শহর যেমন ভ্রমণ করেছি তেমনি দেশটির সমাজ, সংস্কৃতি, গণমানুষকে খুব কাছে থেকে দেখার চেষ্টা করেছি। বোঝার চেষ্টা করেছি চীনাদের মনমানসিকতা। সেসব অভিজ্ঞতার আলোকেই এ বই লেখা। এছাড়া সিআইপিসিসি প্রোগ্রাম সম্পর্কেও কিছুটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা রয়েছে। প্রতিবছর এ প্রোগ্রামের অধীনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সাংবাদিকদের নিয়ে চীনের উন্নয়ন ও গণমাধ্যম সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয়। এমনকি রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের অধীনে সাংবাদিকতা, উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন, সংস্কৃতি, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতি, চীন কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিসি’র অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া, এক অঞ্চল এক পথসহ নানা বিষয়ে ক্লাস হয়। এ সব বিষয়ের সমন্বয়ে বর্তমান চীনের একটা বাস্তব চিত্র বইতে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এছাড়া বিভিনড়ব শহর, পর্যটনী কেন্দ্র ও দর্শনীয় স্থান ভ্রমণের কথা যেমন বইতে স্থান পেয়েছে তেমনি মজার মজার অভিজ্ঞতা, চীনা সমাজে প্রচলিত কল্পকাহিনীও ৮গিণচীনে ১৭১ দিন বাদ যায়নি। রাজনীতিক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, শিল্পপতি, ধর্মীয় ব্যক্তিত্বসহ দেশটির নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময়ে চীন সম্পর্কে ভালোভাবে জানার সুযোগ পেয়েছি। দীর্ঘ প্রায় ছয় মাসের অবস্থানে অর্জিত সেসব অভিজ্ঞতা ধরে রাখতে এবং তা থেকে যাতে অন্যরা চীন সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারেন সেই ইচ্ছা থেকেই এ বই লেখা। আশা করি পাঠক সমাজ ‘গণচীনে ১৭১ দিন’ বই থেকে চীন সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন। সিআইপিসিসি প্রোগ্রামে অংশ গ্রহনের সুযোগ দেয়ার জন্য বাংলাভিশনের শ্রদ্ধেয় চেয়ারম্যান আব্দুল হক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান, প্রধান সম্পাদক ও হেড অব নিউজ ড. আবদুল হাই সিদ্দিক এবং চীন দূতাবাসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। বইটি লেখার ক্ষেত্রে পরামর্শসহ নানাভাবে সহায়তাকারী সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পরিশেষে লেখাগুলো বই আকারে প্রকাশের জন্য কারুবাক-এর সত্ত্বাধিকারী গোলাম কিবরিয়াকে অসংখ্য ধন্যবাদ।