আলোচ্য গ্রন্থে বাংলাদেশের জাদুঘর ব্যবস্থা সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করা হয়েছে। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বি.এ সম্মান শ্রেণির কারিকুলামে আরকাইভস ও জাদুঘর বিষয় দুটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমি ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আরকাইভস শিরোনামে একটি বই প্রকাশ করেছি (ঢাকা : সুবর্ণ, ২০১৮)। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে জাদুঘর শিরোনামে ছোট আকৃতির আলোচ্য বইটি রচনা করেছি। জাদুঘরে একটি দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের উপকরণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা হয়। জাদুঘর নিয়ে তথ্য কম এবং বিষয়টিও টেনিক্যাল । জাদুঘর গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ উৎস হচ্ছে সংশ্লিষ্ট জাদুঘর থেকে প্রকাশিত ব্রশিয়ার, জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত জাদুঘরভিত্তিক ফিচার, স্থানীয় ইতিহাস গ্রন্থে (জেলা ও উপজেলা বিষয়ক গ্রন্থ) উল্লেখিত সংশ্লিষ্ট জেলার জাদুঘর নিয়ে রচনা, ইত্যাদি। তবে এসব খুঁজে পাওয়া কঠিন। হেরিটেজ আরকাইভসের সংগ্রহে কিছু ব্রুশিয়ার, জাদুঘর বিষয়ক পেপার ক্লিপিং ও জেলা ও উপজেলার ইতিহাসের গ্রন্থে কয়েকটি জাদুঘর সম্পর্কে তথ্য পেয়েছি। উল্লিখিত উৎসমূহে প্রাপ্ত তথ্যাদির ওপর ভিত্তি করেই এই ক্ষুদ্ৰ পাণ্ডুলিপি প্রণয়ন করেছি। কয়েকটি জাদুঘরের বিবরণী রেফারেন্সসহ এই গ্রন্থে সংকলন করা হয়েছে। আমার গ্রন্থের প্রথম অধ্যায়ে বিভাগভিত্তিক একটি জাদুঘর তালিকা উপস্থাপন করেছি। তালিকায় ১৪৭টি জাদুঘরের উল্লেখ আছে। মাঠ সমীক্ষার ভিত্তিতে জাদুঘরগুলির নিদর্শনাদির বিবরণ দেওয়া সম্ভব। আমি আগ্রহী পাঠকদের জন্য আলোচ্য গ্রন্থে কতিপয় জাদুঘর পরিচিতি উল্লেখ করলাম। এর মধ্যে কয়েকটি জাদুঘরের বিবরণী প্রকাশিত গ্রন্থ, দৈনিক পত্রিকা ও ব্রুশিয়ার থেকে সংগৃহীত। গ্রন্থটিকে পূর্ণাঙ্গ বলা যাবে না। পাঠকগণ বাংলাদেশের জাদুঘর সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারণা লাভ করবেন মাত্র।
ড. মাে. মাহবুবর রহমান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। তাঁর গবেষণার বিষয় মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, আধুনিক বাংলা ও বাংলাদেশ, স্থানীয় ইতিহাস এবং আরকাইভস। তিনি এখন পর্যন্ত ১৩টি গ্রন্থ ও প্রায় ৬০টি গবেষণা প্রবন্ধ লিখেছেন। তাঁর উল্লেখযােগ্য গ্রন্থগুলি হলাে: একাত্তরে গাইবান্ধা, বাংলাদেশের ইতিহাস ১৯০৫-৪৭, ১৯৪৭-৭১, বাংলাদেশের সাংবিধানিক ইতিহাস ১৭৭৩ থেকে, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (যৌথভাবে), গণহত্যাবধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ: রাজশাহী জেলা, বাংলাদেশ আরকাইভস ইত্যাদি। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের উপকরণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে রাজশাহীতে একটি আরকাইভস প্রতিষ্ঠা করেছেন। উক্ত আরকাইভসে সংগ্রহ করা হয়। লিফলেট, পােস্টার, স্মরণিকা- বার্ষিকী, জেলাউপজেলার ইতিহাস, জীবনী- আত্মজীবনী, সাময়িকী-লিটল ম্যাগাজিন, গবেষণা জার্ণাল, বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সমাজ-সংস্কৃতি ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থ, এম. ফিল ও পি. এইচ. ডি. থিসিস, ইত্যাদি। আরকাইভসে এপর্যন্ত ৪৭ জন তাঁদের সংগ্রহ দান করেছেন।