হজরত সাহাল ইবনে সাদ রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে যাকে রাইয়ান বলা হয়। কেয়ামতের দিন ওই দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে রোজাদাররা। অন্য কেউ প্রবেশ করবে না। বলা হবে, রোজাদাররা কোথায়? তারা দাঁড়াবে। তাদের ছাড়া অন্য কেউ তা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। তাদের প্রবেশের পর দরজাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর কেউ তা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ইতেকাফ কী? দুনিয়ার কাজকর্ম, অর্থোপার্জনের ঝামেলা এবং ব্যক্তিগত ব্যস্ততায় পড়ে মানুষ নিজের সৃজন উদ্দেশ্যের ব্যাপারে গাফেল হয়ে যায়। মানুষের মন-মগজে শয়তানি প্রভাব এমনভাবে ছেয়ে যায় যে, অন্য কোনো বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করার অনুভূতিও মানুষের থাকে না। এই গাফলতি ও অবহেলা ক্রমে ক্রমে এতই বৃদ্ধি পায় যে, সামান্য সময়ের জন্য মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়া এবং রোজা, জাকাত ইত্যাদি ইবাদত পালন করেও তা দূর হয় না। নামাজ পার্থিব ধ্যানধারণার ভেতর দিয়ে আদায় করা হয়। রোজা অনর্থক ও বেহুদা কথাবার্তায় উৎসর্গিত হয়ে যায়। এই অবস্থা সচেতন ও চিন্তাশীল উম্মতের জন্য মন ভাঙা এবং তাওহিদপ্রিয় লোকদের জন্য ব্যথা-যন্ত্রণার কারণ বনে যায়। এহেন অবস্থা সব বাদশাহির মালিকের দরবারে এসে পড়ে থাকার ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। মহা দয়াময় আল্লাহ তাআলার কূলকিনারাহীন রহমত চিন্তাশীল লোকদের জন্য আশার আলো জ্বালিয়ে দেয় এবং আল্লাহ তাআলার ভর-ভয় ও তাঁর রহমতের আশা-আকাঙ্ক্ষায় আর গাফলতে নিমজ্জিত লোকজন তাদের অবস্থার মাধ্যমে এই কথা বলে প্রভুর দরবারে অবস্থান নেয় : মনটা চায় যে, তাঁরই দরজায় পড়ে থাকি, দরবারের অনুগ্রহ পাওয়ার জন্য মাথা হেঁট করে। এই স্পৃহা, এই এশক, এই আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং এই অনুগ্রহবোধের নামই ইতেকাফ।