অরণ্য প্রকৃতি ও আরণ্যক জীবনের পটভূমিতে রচিত বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসাধারণ একটি উপন্যাস আরণ্যক। ১৯২৮ সাল থেকে বেশ কিছুকাল তিনি পাথুরিয়াঘাটা এস্টেটের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজারের কাজ নিয়ে ইসমাইলপুর ও আজমাবাদের অরণ্যপরিবেশে অবস্থান করেন। তিনি ১৯৩৭ থেকে ১৯৩৯ সালের মধ্যে এই উপন্যাসটি রচনা করেন। পরে ১৯৩৯ সালে কাত্যায়নী বুক স্টল থেকে সেটি বই আকারে প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাসকে বাংলা সাহিত্যের এক শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে মনে করা হয়। এ উপন্যাসে রয়েছে প্রকৃতি ও মানুষের সমন্বয়ে গঠিত এক মহান জগৎ যা আরণ্যকের প্রাণসত্ত্বা। সেই প্রাকৃতিক পরিবেশে যেমন রয়েছে বন্যমহিষের রক্ষাকর্তা ট্যাড়বারো দেব, বেঙ্কটেশ্বর কবি, মটুক নাথ অধ্যাপক, যুগলপ্রসাদ উদ্ভিদবিদ, দোবরু পান্না সাঁওতাল রাজ, যৌবনোচ্ছল তরুণী ভানুমতী তেমনি আছে গোলগোলি লতা, হংসলতা, উইস্টারিয়া, বনঝাউ, পিয়াল, পলাশ, ধাতুপ ফুল, কেলিকদম, ডগরোজ, চেনার, গুড়মী ফল ইত্যাদি উদ্ভিদ । বইটি পড়ার সময় এসব গাছপালা কেমন, সেগুলোও জানতে ইচ্ছে করে । অনেকটা পাঠকদের সেসব ইচ্ছেকে মাথায় রেখেই লেখক আরণ্যকের উদ্ভিদগুলো সম্পর্কে লিখেছেন, পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন সেগুলোকে আরণ্যকের পাঠকদের সাথে। এ উপন্যাসের পটভূমিতে ৯২টি উদ্ভিদের উল্লেখ থাকলেও পটভূমি বিধৃত স্থানে প্রায় ৭০-৭৫টি উদ্ভিদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। অন্য নামগুলো প্রসঙ্গক্রমে এসেছে, যেমন চেনার। চেনার কাশ্মিরের গাছ- লবটুলিয়ার অরণ্যে কখনোই ছিল না। বইটি হতে পারে আরণ্যক উপন্যাসের একটি পরিপূরক গ্রন্থ ।
কৃষিবিদ মৃত্যুঞ্জয় রায় প্রায় তিন দশক ধরে বিভিন্ন জাতীয় পত্র-পত্রিকায় লিখছেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে এম.এসসি.এজি (উদ্যানতত্ত্ব) ডিগ্রি অর্জন করেন। পেশাগতভাবে তিনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে। সর্বশেষ অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর রয়েছে কৃষিক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে কাজ করার সুদীর্ঘ বাস্তব অভিজ্ঞতা ও ফসল উৎপাদনের বিশেষ পারদর্শীতা, শিক্ষকতা ও প্রশিক্ষণের দক্ষতা। এর ওপর ভিত্তি করে তিনি লিখেছেন ‘বাংলাদেশের অর্থকরী ফসল’ বইটি।। কৃষি বিষয়ে তিনি ইতােমধ্যে অনেকগুলাে বই লিখেছেন। এ পর্যন্ত তাঁর লেখা ৮৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে যার মধ্যে ৬২টি বই কৃষি বিষয়ক। কৃষি বিষয়ক লেখালেখির জন্য তিনি ২০১২ সালে পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার এবং ২০১৮ সালে পেয়েছেন বাংলাদেশ একাডেমী অব এগ্রিকালচার স্বর্ণপদক।