"লা-মিজারেবল"বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: প্রায় তিন লক্ষ কপি লা-মিজারেবল’ এখন বাংলাদেশের কিশােরকিশােরী ও বইপ্রেমী পাঠকের হাতে। সতেরাে বছরের এক দুরন্ত কিশাের যেন আমার মানতে এতটুকু দ্বিধা নেই, প্রথম প্রকাশের পর থেকে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র-এর প্রকল্প : রিডিং হেবিট বা পাঠাভ্যাস কর্মসূচীতে অন্তর্ভুক্তি এবং পাঠক প্রিয়তার কারণে ঘন ঘন মুদ্রণে যেতে হয়েছে সেই অর্থে বানান একবারের জন্যও সংশােধন করে উঠতে পারিনি। বইটি যাকে উৎসর্গ করেছি সে আমার ভাতিজী ‘উর্বী’, ও বইটি বিসাকে থেকে পুরস্কার পেয়েছিল, বলেছে বেশ কবার পড়েছেও, ভুল কিছু বানান চোখে পরলেও বলেনি কাকুর প্রতি শ্রদ্ধাবােধ থেকে হয়তাে। আমি বর্তমান সংস্করণে আপাদমস্তক বানানগুলাে ওকে দিয়েই ভােলাই করিয়েছি। এটা ওর কাজ ও কর্তব্য বলবাে—তাই ধন্যবাদ দিলাম না। জয়তু উর্বী। যে অর্থে অনুবাদ শব্দের আভিধানিক বিচার হয় সেই অর্থে গ্রন্থটি ‘অনুবাদ’ নয়—এ গ্রন্থটির প্রচুর বাংলায় অনুবাদ বেরিয়েছে। ভবিষ্যতে হয়তাে আরাে অনেকে করবেন। আমি বাংলাদেশে প্রকাশিত ভিক্টর হুগাে’-র ‘লা-মিজারেবল' বইটি যত ধরনের পাওয়া গেছে তার সবগুলােই পরেছি। এবং সত্যি কথা বলতে ভীষণভাবে উপভােগও করেছি তারপরও আমি আমার মত করে এই কালজয়ী বিখ্যাত গ্রন্থটির বাংলায় রূপান্তরের কাজে হাত দেয়ার লােভ। সামলাতে পারলাম না। যেহেতু গ্রন্থটি লাইন টু লাইন বাংলা করা হয়নি সে অর্থে আমার গ্রন্থটিকে অনুবাদ না বলে রূপান্তর শব্দের ব্যবহার। খুব কম সময়ে প্রথম মুদ্রণের কম্পােজ করার জন্য অকাল প্রয়াত বন্ধু সৈয়দ আবদুল হালিম ও আমার পছন্দের শিল্পী সুখেন দাস যে এক বৈঠকে এই প্রচ্ছদটি করে দিয়েছিলেন এ দুজনের কাছে আমি দায়বদ্ধ হয়ে রইলাম। বর্তমান প্রচ্ছদ আমার নিজেরই করা মূল গ্রন্থের আদলে।
মূলত প্রকাশক নসাস ঢাকা'-র প্রতিষ্ঠাতা ইফতেখার রসুল জর্জ।, কোনাে কোনাে গ্রন্থে তিনি তার পারিবারিক প্রিয় নাম জর্জ হায়দার ব্যবহার করেন। এছাড়া তিনি আরও একটি নাম ইরাজ হায়দার-ও ব্যবহার করে থাকেন। জন্ম ২২ জুলাই ১৯৫০ বিক্রমপুর। পড়াশােনার বিষয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান। গ্রন্থ প্রকাশনার উপর দেশে ও বিদেশে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন চারটি। এর মধ্যে Asia Pacific Cultural Centre for UNESCO, Tokyoএর দুটি। সরকারি প্রতিনিধি দলে এবং ব্যক্তিগতভাবে অংশগ্রহণ করেছেন অসংখ্য আন্তর্জাতিক গ্রন্থমেলায়। ঘুরেছেন যুক্ত জার্মানী, ফ্রান্স, পােলান্ড, বুলগেরিয়া, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, সাবেক সােভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, জাপান, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, চীন, ভারত ইত্যাদি। কাজ করেছেনে লন্ডন থেকে প্রকাশিত ‘নতুন দেশ, ‘পূর্বদেশ', ও 'New Link' পত্রিকায়। বর্তমানে নতুন উদ্যোমে আবার প্রকাশনা ও লেখালেখি নিয়ে ব্যস্ত। প্রচুর গ্রন্থের প্রচ্ছদ শিল্পী, লেখালেখি, সংগীত, ক্রিকেট এবং খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বের সাথে পরিচিত হওয়া প্রধান সখ... দেশ বরেণ্য ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্ত শিশু সাহিত্যিক পিতা মরহুম মােহাম্মদ নাসির আলী তার লেখার অনুপ্রেরণা। রাজনীতি, অনুবাদ সাহিত্য ও শিশু সাহিত্য তার লেখার ঠাই। প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৫৩টি। এসব কাজে পুরস্কার পেয়েছেন ৬ বার। তার মধ্যে শান্তিনিকেতন থেকে প্রকাশনা সম্মাননা পদক, কমল স্বর্ণ পদক, ভারতের থেকে 'Sufi National Communal Harmony Award 2005, মুন্সিগঞ্জ ও বিক্রমপুর সমিতি থেকে বরণীয় বিক্রমপুর ১০০' পদক, নাট্য সভা কর্তৃক প্রদত্ত শ্রেষ্ঠ ভ্রমণ কাহিনী লেখক পদক ২০১১ এবং বিশ্ব মাদক প্রতিরােধ দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত অতীশ দীপঙ্কর গবেষণা পরিষদ সম্মাননা পদক ২০১৪ পেয়েছেন লেখক ও প্রকাশক হিসেবে।