শুধু মুন্সিগঞ্জ-বিক্রমপুরেরই নয় যে কোন অঞ্চলের কৃতী সন্তানদের তালিকা করতে গেলে তা নিয়ে বিতর্ক হবেই। বিভিন্ন অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি হলে সেই সমস্যাটা আরো বেশিই হবে। মুন্সিগঞ্জ জেলার প্রাচীন নাম ছিল বিক্রমপুর। বিক্রমপুরের আয়তন আবার বারবার পরিবর্তন হয়েছে। পদ্মার গতিপথ পরিবর্তনের ফলে বিক্রমপুর দ্বিখণ্ডিত হয় এবং একসময় দক্ষিণ বিক্রমপুর বিভিন্ন জেলার সাথে মিশে সেই জেলার অংশ হয়ে যায়। নদী ভাঙ্গন ও দেশত্যাগের কারণেও এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। কবি জীবনানন্দ দাশ (গাউপাড়া, নদীগর্ভে বিলীন) ও সংগীতশিল্পী শ্রেয়া ঘোষাল (হাঁসাড়া)-সহ অনেকের নামই শীর্ষ ১০০ জনে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি কারণ তাদের পূর্বপুরুষদের বাস বিক্রমপুরে হলেও তাদের জন্ম যেমন বিক্রমপুরে হয়নি আবার পৈতৃক ভিটার সাথেও তাদের কোন সম্পর্ক ছিল না; এমনকি তাদের পিতারাও এ অঞ্চলের সাথে আর সম্পর্ক রাখেননি। আবার যাদের পৈতৃক বাড়ি বর্তমান মুন্সিগঞ্জ জেলাধীন এলাকার বাইরে কিন্তু প্রাচীন বিক্রমপুরের মধ্যে তাদের নামও রাখা হয়নি কারণ তাঁরা এখন আর নিজেদের বিক্রমপুরের মানুষ হিসেবে পরিচয় দেন না। বৌদ্ধ ধর্মপ্রচারক শান্তরক্ষিতের পৈতৃক বাড়ি বিক্রমপুরে কি না তা নিয়ে দ্বিমত থাকায় তাঁকে এবং এমন অন্য ব্যক্তিত্বদেরও তালিকায় আনা হয়নি। একশ জনের মধ্যে বিভিন্ন পেশার মানুষকে আনার জন্য অধিক পরিচিত বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ ও লেখকের নামও অন্তর্ভূক্ত করা সম্ভব হয়নি যারা দেশব্যাপী সুপরিচিত। একই কথা বলা যায় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রেও। দু‘জন সেক্টর কমাণ্ডারসহ ক্রেক-প্লাটুনের গেরিলা যোদ্ধাদের বেশ কয়েকজনই বিক্রমপুরের। আবার ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিপ্লবী ও স্বাধীনতাকামী নেতা ছিলেন বিক্রমপুরের। তাদের মধ্যে মাত্র কয়েকজনকেই এখানে উপস্থাপন করা সম্ভব হয়েছে।