“ইসলামি দাওয়াতী কাজের সনদ: একটি ভারসাম্যপূর্ণ কর্মকৌশল” সাৰ্বজনীন মুসলিমদের দাওয়াতের জন্য বিশেষত: এ দাওয়াতী কাজে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী দায়ীদের ক্ষেত্রে এ অঙ্গীকারের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যেন তারা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা, কর্মপরিকল্পনা ও মূলনীতি অনুসরণের মাধ্যমে দাওয়াতী কাজের জন্য একটি সম্মানজনক ইসলামি কর্মকৌশল নির্ধারণ করতে পারে। মনন ও অনুশীলনের জন্য তারা একটি যুগোপযোগী গাইড লাইন পেতে পারে; যা অনুসরণের মাধ্যমে একটি কল্যাণমুখী ও বাস্তবানুগ দাওয়াতের পথ সুগম হয় এবং মতপার্থক্য, ভ্রান্তি ও গোড়ামীর পথ সংকুচিত হয়। এ অঙ্গীকারের মূল লক্ষ্য হলো, এটি বাস্তবায়নের ফলে দায়ীদের মাঝে ভালোবাসা ও আস্থার শক্তি বৃদ্ধি পাবে, গঠনমূলক সমালোচনার পথ উম্মুক্ত হবে, চিন্তা ও মননশীলতা আরও প্রশস্থ হবে । ঐকমত্যের ভিত্তিতে সৃজনশীল, সংস্কারমূলক ও পারস্পরিক কল্যাণকর উদ্যেগকে স্বাগত জানানো হবে। মতপার্থক্য দূরীভূত হবে এবং কল্পণার জগত থেকে বেরিয়ে বাস্তবায়নের ময়দানে কার্যকরী অবদান রাখতে সক্ষম হবে। আশা করা যায়, এ অঙ্গীকারনামাটি আল-কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে প্রণীত হয়েছে। এটি যে কোনো প্রকারের সংকীর্ণতা ও অতিরঞ্জিতকরণ থেকে মুক্ত। এটি হবে মধ্যপন্থা ও ভারসাম্যপূর্ণ কর্মকৌশলের আদর্শ নমুনা। এটি কোনো দল বা গোষ্ঠীর রঙে রঙিন নয়, নয় কোনো সংগঠন, দাওয়াতী সংস্থা অথবা কোনো ফিকহী গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিগত মতবাদ। এটি বিশেষ কোনো অঞ্চল বা প্রদেশের জন্য বিশেষভাবে প্রণীত এবং অন্যদের জন্য বাস্তবায়নের অযোগ্য- এমনটিও নয়। বরং পৃথিবীর সকল দেশের সকল মানুষের জন্য এটি সমানভাবে প্রযোজ্য হবে; ইনশাআল্লাহ ।
ড. হিশাম ইয়াহইয়া আলতালিব ১৯৪০ সালে ইরাকের নিনেভার মাসুল শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্যের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ হতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭০ সালে তিনি আমেরিকার ইন্ডিয়ানা অঞ্চলের পুরদু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ হতে এম এস ও ১৯৭৪ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মজীবন শুরুর পাশাপাশি তিনি উত্তর আমেরিকাতে ইসলাম প্রচার ও প্রসারের কাজে অদ্যাবধি নিয়োজিত রয়েছেন। ১৯৭৫-১৯৭৭ সেশনে তিনি Muslim Students Association of the United States and Canada (MSA) এর প্রথম নির্বাচিত পরিচালক (প্রশিক্ষণ) এর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬ সালে তিনি International Islamic Federation of Students Organization (IIFSO) এর মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তিনি SAAR Foundation এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮১ সাল থেকে তিনি International Institute of Islamic Thought (IIIT) এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, পরিচালক (ফিন্যান্স) এবং ভাইস-প্রেসিডেন্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি এ সংস্থার প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্মরত। ড. হিশাম সর্বস্তরের মানুষকে ইসলামি জ্ঞানার্জন ও তা অনুসরণের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে নিয়মিত লেখালেখি করছেন। The Training Guide for Islamic Workers, Parent-Child Relations ও আলোচ্য The Dawah Covenant of Honor এর মতো জননন্দিত ও বহুল প্রচারিত বইগুলো সমাজের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী, পিতা-মাতাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট গাইডবুক হিসেবে সমাদৃত।