মাওলানা জিয়াউর রহমান ফারুকী। এই নামটির সাথে আমার পরিচয় তার মৃত্যুর অনেক পরে, ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে। সেসময় ইউটিউবের যুগ শুরু হয়েছে। আর সেখানে ঘুরতে গিয়েই তার আলোচনা শুনতে পাই। প্রথম যেদিন তার আলোচনা শুনি, সেদিন থ মেরে বসে ছিলাম। মুগ্ধতা আচ্ছন্ন করে রেখেছিল আমাকে। তারপর তার আলোচনা যত শুনেছি, মুগ্ধতা ততই বেড়েছে। কিছুদিনের মধ্যে মাওলানা আজম তারিক, আল্লামা আলী শের হায়দারী ও মাওলানা হক নেওয়াজ জঙ্গবীর আলোচনার সাথেও পরিচিত হই। তখন পর্যন্ত আমি শুধু তাদের আলোচনার সাথেই পরিচিত ছিলাম। তাদের ত্যাগ ও কুরবানির সাথে পরিচয় হয়নি। তাদের ত্যাগ ও সংগ্রামের সাথে পরিচয় হল মাহমুদ মাসরুর ভাইয়ের হাত ধরে। মাহমুদ মাসরুর ভাই দীর্ঘ সময় ধরে সিপাহে সাহাবা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। তাদের সাম্প্রতিক কার্যক্রমের দিকেও তিনি সতর্ক দৃষ্টি রাখেন। তার কাছেই বিভিন্ন বইপত্রের সন্ধান পাই, যাতে সিপাহে সাহাবার ইতিহাস ও তার নেতৃবৃন্দের জীবনীর সন্ধান মেলে। এসব বইপত্র পড়ে সিপাহে সাহাবার প্রতিষ্ঠাতা ও তার নেতৃবৃন্দের প্রতি ভালোবাসা আরো বেড়ে যায়। তাদের জীবনের দুটি বিষয় আমাকে আকৃষ্ট করলো। প্রথমত, এই মানুষগুলো রবের সাথে কৃত-ওয়াদার ক্ষেত্রে সৎ ছিলেন। তাদের ত্যাগ, কুরবানি ও আত্মদান এ কথা স্পষ্ট প্রমাণ করে। দ্বিতীয়ত, তারা হকের পক্ষে দৃঢ় ছিলেন। শত বাঁধা-বিপত্তি ও নির্যাতনও তাদেরকে আপন পথ থেকে হটাতে পারেনি। লক্ষ করলাম বাংলা ভাষায় তাদের জীবনী জানার জন্য কোনো বইপত্র নেই। এই শূন্যতা পূরণের জন্যই এই বইয়ের প্রয়াস। বক্ষ্যমাণ পুস্তিকাটি সিপাহে সাহাবার অন্যতম প্রধান স্তম্ভ মাওলানা জিয়াউর রহমান ফারুকীর আত্মজীবনী। বইয়ের শেষে শহীদ মাওলানা জিয়াউর রহমান ফারুকী, মাওলানা হক নেওয়াজ জংবী ও মাওলানা আজম তারিক রহ.-এর পরিচয় এবং সিপাহে সাহাবার সাম্প্রতিক কার্যক্রম সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে। এই বইপাঠে যদি কারো মধ্যে দীনের জন্য নিজেকে কুরবান করার সামান্য আগ্রহও তৈরি হয়; তবেই আমাদের এ প্রচেষ্টা স্বার্থক হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তার দীনের জন্য কবুল করুক।