"ইতিহাসের ঢাকা" বইটির 'প্রসঙ্গ কথা' অংশ থেকে নেয়াঃ ছােটদের জন্য রচিত এ বই। এতে গল্পের আকারে ইতিহাসের ৭টি অধ্যায় সংযােজিত আছে। ভারি ভারি কিছু বিষয়কে সহজ করে তােলার চেষ্টা করা হয়েছে। এসবের মধ্যে ঢাকা নামের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, প্রত্নস্থাপনা ও পুরাবস্তুর আলােকে ইতিহাসের ব্যাখ্যা, বসতি বিস্তার, রাজনীতির ধারাবাহিক পালাবদল, উপনিবেশবাদের কুফল, ঐতিহ্য বিকৃতির ক্ষেত্রে বৈদেশিক চক্রান্ত, জাতীয়তাবাদের মূল ভিত, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা অন্তর্ভুক্ত। উদ্দেশ্যের প্রতিফলন কতটা ঘটেছে জানি না। তবে চেষ্টার ত্রুটি করিনি, এটুকু বলতে পারি। বাকি বিচারের ভার যারা পড়বে তাদের উপর ছেড়ে দিলাম। আমাদের দেশে সাধারণত ছােটদের জন্য বই লিখতে গিয়ে ভূত-পেত্নি বা সাইন্স ফিকশনের উপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। ফলে ইতিহাস-ঐতিহ্য ভিত্তিক শিশুতােষ বই-এর তুলনামূলক উপস্থিতি একেবারেই কম। তাই ছােটদের কাছে এ বিষয়টি দীর্ঘ সময় ধরে অজানা থেকে যায়। একই সঙ্গে অজানা থেকে যায় দেশ ও জাতির বীরগণের পরিচয়। ফলে দেশের জন্য শিশুরা তাদের করণীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে দীর্ঘ দিন দিকনির্দেশনা লাভে বঞ্চিত থাকে। আমার ধারণা, এ পুস্তক উল্লিখিত ঘাটতি কমানাের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
বহুমাত্রিক বিষয় নিয়ে সমকালিক লেখালেখির অঙ্গনে হাতেগােণা যে ক’জন লেখিয়ে সরব তাঁদের মধ্যে মােহা. মােশাররফ হােসেন একজন। দীর্ঘকাল সরকারি চাকুরিতে নিয়ােজিত থাকাকালীন যে লেখালেখি শুরু করে ছিলেন তা অবসর জীবনেও ধরে রেখেছেন । শুরু করেছিলেন পুরাতত্ত্ব ও মূর্তিতত্ত্ব দিয়ে। আর বর্তমানে নিরলস কাজ করছেন ইতিহাস, ধর্মতত্ত্ব, জাতিতত্ত্ব, পর্যটন প্রভৃতি নিয়ে । বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বর্তমানে তার প্রকাশিত বই-এর সংখ্যা ৪৫টি। সম্প্রতি (খ্রি. ২০১১ সাল) লেখক সম্পাদনার কাজে নিয়ােজিত রয়েছেন। তাঁর সর্বশেষ সম্পাদিত বই এশিয়াটিক সােসাইটি অব বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত The Archaeological Heritage of Bangladesh. Os কিছু লেখা ইতিমধ্যে বিদেশি ভাষায়ও অনূদিত হতে শুরু করেছে ।