কোথায় অচিন সেই সন্ন্যাসীর সাথে পর্বতের দেশে যাবে পানিডাঙা গ্রামের ছেলে জুলহাস কিন্তু একটুখানি গিয়েই কিনা তার মনে পড়ে মায়ের কথা। মায়ের যে বারণ দেওয়া আছে। মাকে না বলে জুলহাস যেনো কোথাও না যায়। মা যে তাকে ভালোবাসে, আর তার ভালাইয়ের জন্য কতো কতো নিয়মবিধিই না পালন করে মায়ে। সেই মায়েরে কষ্ট দিয়ে জুলহাস আলী বুঝি কোনো কিছু করতে পারে। না কোথাও চলে যেতে পারে। জুলহাস আলী মাকে ভালোবাসে। দাদীকে ভালোবাসে। সে ভালোবাসে তাদের উঠানের নিম গাছকে, ভালোবাসে ঝোপের আড়ালের ডাহুকটাকে, ভালোবাসে নিজেদের পুকুরে সাঁতার কাটতে থাকা ঢোঁড়া সাপটাকে। তাদের সকলের সাথে মিলেমিশেই তো তার রোজকার দিন কাটে। এরমধ্যেই একদিন জুলহাস আলীর সাথে দেখা হয় এক ছেলের। সেই ছেলের শরীরটা কেবলই জলে ভেজা থাকে। সে কেবল বন্যার পানির কচুরিপানা ঠেলে ঠেলে সাঁতার কেটে কেটে জুলহাস আলীর সাথে দেখা করতে আসে। আর, দুনিয়ার সব খাবারের মধ্যেই সে কিনা গরম ভাতের মিঠা গন্ধকে পায়! কে এই ছেলে? জুলহাসের এই নতুন বন্ধুটার ভেজা শরীরে কেনো শুধু শ্যাওলা লেগে থাকে। আমাদের এই দেশের জল ও প্রকৃতির সবুজ থেকে যেনো এই গল্পটা জন্ম নিয়েছে, আমাদের জন্য। আঞ্চলিক যে ভাষাটা এই গল্পে ব্যবহার করা হয়েছে, সেই ভাষাটাকে আমরা এই বইয়ের অতুল্য সম্পদ বলে গণ্য করতে পারি। ভেজা এই বাংলার মাটি ও মেঘমোড়ানো কালো আকাশের মধ্যে গেথে থাকা জীবনেরই নাম পানিডাঙা গ্রামে যা কিছু ঘটেছিলো। ..
ইনডিপেন্ডেট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ-এ অধ্যাপনারত আকিমুন রহমান পিএইচ ডি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তার প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ; আধুনিক বাংলা উপন্যাসে বাস্তবতার স্বরূপ, সােনার খড়কুটো, পাশে শুধু ছায়া ছিলাে, পুরুষের পৃথিবীতে এক মেয়ে, রক্তপুঁজে গেঁথে যাওয়া এ মাছি, এইসব নিভৃত কুহক।