জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদ একটি ‘সমাজতান্ত্রিক গণসংগঠন’। ১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর জাসদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু। বাঙালির জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন, স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পরিকল্পনাকারী ও সংগঠকগণ অসমাপ্ত মুক্তিযুদ্ধ সমাপ্ত করার লক্ষে জাসদ গঠন করেন। দল হিসেবে আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের আগে থেকেই জাসদ রাজনীতির সংগঠকগণ হত্যার শিকার হতে থাকেন। দল গঠনের পরও তাঁদেরকে ব্যাপক হত্যা-গুম-অত্যাচার-নির্যাতন- নিপীড়নের শিকার হতে হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনের নীতি ও কৌশল নির্ধারণে, সেগুলোর প্রয়োগে এবং বিজয় অর্জনে জাসদ নির্ধারক ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশের রাজনীতির দীর্ঘতম সময়ের জোট ১৪ দল গঠন করে জঙ্গিবাদ-সাম্প্রদায়িকতাকে কিছুটা কোণঠাসা করতে পারা জাসদের অন্যতম কৃতিত্ব। যাত্রাপথে শাসকদের হত্যা-গুম-অত্যাচার- নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হওয়ার পাশাপাশি বিশ্বাসঘাতকতা ও সহযোদ্ধাদের পশ্চাদপসরণে জাসদ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাসদের বিরুদ্ধে ব্যাপক মিথ্যাচারভিত্তিক অপপ্রচারের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ রয়েছে দেশের বাম, মধ্য ও ডানপন্থি রাজনৈতিক দলের অনেক ব্যক্তি ও গণমাধ্যম। ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে জাসদ’ জাসদ রাজনীতির একটি বস্তুনিষ্ঠ পাঠ।
জিয়াউল হক মুক্তা (১৩ ডিসেম্বর ১৯৭১) মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পর ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগদান করেন। তিনি ছাত্রলীগ শেরপুর কলেজের সাধারণ সম্পাদক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সংসদের প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্র রাজনীতির পর তিনি জাসদ রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৯৭ সালে জাসদ-বাসদের বিভিন্ন ধারা একীভূত হবার পরে গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে কনিষ্ঠতম সদস্য হিসেবে সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জাসদের মুখপত্র 'লড়াই' এর সম্পাদক ও প্রকাশক। তিনি নৃবিজ্ঞান আর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতি বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। প্রান্তে-দেশে-বিদেশে কাজ করেছেন কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানে ও জাতিসংঘে। কাজ করেছেন জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও শ্রমিক-নারী-শিশু অধিকার, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে; এখন একজন স্বাধীন উন্নয়ন-পরামর্শক। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি অনুবাদ, সম্পাদনা, সমালোচনা, গবেষণা ও সৃজনশীল সাহিত্যকর্মের সাথে যুক্ত। ঐতিহ্য হক ও দ্যোতনা হক-এর জনক।