আরবি কাব্যের সোনালি যুগ হলো আইয়ামে জাহেলিয়াতে কাব্যচর্চার যুগ। ইমরুউল কায়েস, ত্বরাফাসহ বিখ্যাত মুআল্লাকার কবিদের কাব্যগুলো সেসময়ের রচনা। এ যুগের কাব্যগুলো আরবি ভাষা ও সাহিত্যে দালিলিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবিগণের মধ্যেও জাহেলি যুগ থেকেই আরবি কাব্যচর্চায় অনন্য প্রতিভাসম্পন্ন অনেক সাহাবি ছিলেন। কুরআনে কারীমের ভাষালংকার ও মুজিযা অনুধাবন এবং তৎকালীন ও পূর্বাপর সর্বযুগের অবিশ্বাসীদের সামনে কুরআনের ভাব ও ভাষার অপ্রতিদ্বন্দ্বী এবং অকাট্য চ্যালেঞ্জ বুঝতেও প্রাচীন ও নববী যুগের সাহিত্যের পাঠ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামপূর্ব আইয়ামে জাহেলিয়াতে শিক্ষা ও সাহিত্যের উপকরণ স্বল্পতার কারণে আরবি কাব্যই আরবদের দীওয়ান তথা শিক্ষা-সাংস্কৃতি ও জাতিগত ইতিহাসের স্বারক হয়ে ওঠে। কিন্তু সাহিত্যমানে সেযুগের কাব্যগুলো কালজয়ী হলেও সেসব কাব্য অজ্ঞতা এবং আদর্শহীনতা দোষে দুষ্ট। কুফর-শিরক, অশ্লীলতা ও প্রবৃত্তি চরিতার্থের উপাখ্যান হয়ে দাঁড়ায়। ইসলাম ও পবিত্র কুরআন জাহেলি যুগের ঘোর অমানিশা দূর করে আরবসহ গোটা মানবজাতিকে জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করেছে। কুফর-শিরক, জুলুম-অনাচারের আধার অবসানে ওহির নূর জ্বালিয়েছে সর্বত্র। এ বৈপ্লবিক পরিবর্তন এবং জাহেলি যুগের মানুষগুলো সোনালি মানুষ হয়ে কুল-মাখলুকের জন্য আদর্শ হয়ে ওঠার উপাখ্যান উঠে এসেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সিরাত ও তাঁর সাহাবাদের এসব কবিতায়। ইমান ও প্রত্যয়ের সেই উৎসকে জানতে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পূণ্যবান এ সকল সাহাবি (রা.) কবিতাও মূল্যবান আকর। বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্ৰান্ড ইমাম, খলিফায়ে ফিদায়ে মিল্লাত, বাংলাদেশ জমিয়াতে উলামার চেয়ারম্যান আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ দা.বা. তাঁর সম্ভৃদ্ধ অধ্যয়নের সমুদ্র থেকে কুড়িয়ে আনা অসংখ্য মুক্তার এক প্রোজ্জ্বল-ভাস্বর মুক্তা হিসেবে সাহাবা কাব্যের অনন্য সংকলনটি “রাওয়ায়ে মিন আশআরিস সাহাবা” নামে নবী ও সাহাবি উম্মাহর সামনে পেশ করেন। গ্ৰন্থটির মূল আরবি টেক্সট দেশে ও দেশের বাইরে আরববিশ্বে মিসরের বিখ্যাত ‘দারুল হাদীস’ লাইব্রেরী থেকেও প্রকাশিত হয় ২০০৫ সালে। বাঙলাভাষী পাঠকদের জন্য মূল্যবান এ সাহাবা-কাব্যের কাব্যানুবাদ করেছেন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ আলেম সাহিত্যিক মুহাম্মাদ উল্লাহ ইয়াহ্ইয়া।
ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ (জন্ম: ৭ মার্চ ১৯৫০) বাংলাদেশের একজন আলোচিত ইসলামি ব্যক্তিত্ব। তিনি শোলাকিয়া জাতীয় ঈদগাহের ইমাম, জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার সভাপতি, ইকরা বাংলাদেশের পরিচালক। এক লক্ষাধিক আলেম কর্তৃক স্বাক্ষরিত জঙ্গিবাদবিরোধী ফতোয়ার জন্য তার পরিচিতি রয়েছে। আলেম সমাজে বাংলা ভাষার বিস্তারে লাজনাতুত তলাবা নামক একটি সংগঠনের কর্ণধার, কওমি মাদ্রাসার সরকারি স্বীকৃতি আদায়, মসজিদে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সরকারি ভাতা বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের পরিচালক ছিলেন। মাসিক পাথেয় পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সহ তার স্বরচিত ও অনুবাদকৃত গ্রন্থের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। এছাড়াও তিনি এশিয়া ফাউন্ডেশনের বিশেষ পরামর্শক, ফাউন্ডেশন ফর গ্লোবাল পলিসি স্টাডিজ, ইসলামিক রিসার্চ কাউন্সিল অব বাংলাদেশ, ইকরা মাল্টিমিডিয়া ওয়ার্ল্ডওয়াইড লিমিটেডের সভাপতি এবং ইসলামী গবেষণা পরিষদ এবং বেসরকারি দাতব্য সংস্থা ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা।