আমার জীবন আমার সংগ্রাম গ্রন্থে লেখকের শৈশব, স্কুলজীবন, কলেজজীবন ও বিশ^বিদ্যালয়জীবন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের পূর্বাপর রাজনৈতিক ঘটন-াবলী যেভাবে অবলোকন করেছেন তার বিবরণ ঠাঁই পেয়েছে। রাজনৈতিক ইতিহাসের অজানা পর্বগুলো অনেকটাই ফুটে উঠেছে এই গ্রন্থে। বাংলাদেশের ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় যেমন, ১৯৫৪’র নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের ভূমিধস বিজয় এবং তৎপরবর্তী রাজনৈতিক সংকট, আইয়ুব খানের সামরিক শাসন, মৌলিক গণতন্ত্র, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর গ্রেপ্তার, সামরিক শাসনের মধ্যে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রদের জঙ্গি প্রতিবাদ, প্রেসিডেন্ট আইয়ুবের সঙ্গে মওলানা ভাসানীর সাক্ষাৎ, আইয়ুব খান ও মিস ফাতেমা জিন্নাহর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, পাক-ভারত যুদ্ধ, ছয় দফা আন্দোলন, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলার কর্মসূচি জনসম্মুখে উত্থাপন, কারাগারে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ঘটনাবলী, মওলানা আবদুল খান ভাসানী ও শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং আমার নিজের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এই গ্রন্থে বিষদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যেসব ঘটনার সঙ্গে লেখকের সংশ্লিষ্টতা ছিল সেগুলো বর্ণনা করতে গিয়ে লেখক নিজেকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে বড় করে তুলে ধরেননি। আশা করা যায়, ইতিহাসের বিষয়গুলো নিয়ে লেখক যেভাবে সংযম ও বস্তুনিষ্ঠতার পরিচয় দিয়েছেন তা এ দেশের ইতিহাসে একটি বিরল দৃষ্টান্ত। লেখক আত্মজীবনী লিখতে গিয়ে সমকালীন সমাজ ও লৌকিক আচরণের যে বিবরণ দিয়েছেন তা সমাজবিজ্ঞানীদের অনেক কৌতূহল মেটাতে সাহায্য করবে। আশা করা যায়, গ্রন্থটি পাঠকসমাজ কৌতূহল ও আগ্রহ নিয়ে পড়বেন। মাহ্বুব উল্লাহ্। জন্ম ৯ ডিসেম্বর ১৯৪৫, নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জের তিতাহাজরা গ্রামে। অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রির অধিকারী প্রফেসর মাহ্বুব উল্লাহ্ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়, বোস্টন বিশ^বিদ্যালয় ও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা করেছেন। বৈচিত্র্যময় বর্ণাঢ্য জীবনের মানুষ। কর্মজীবন সক্রিয় রাজনীতি থেকে অধ্যাপনা ও গবেষণা পর্যন্ত বিস্তৃত। ১৯৬৭’র ডিসেম্বরে তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লবী নেতা। ১৯৭০’র ২২ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা’র কর্মসূচি উত্থাপনের অপরাধে ইয়াহিয়ার সামরিক আদালতে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে দীর্ঘ ২২ মাস কারান্তরালে অন্তরীণ থাকার পর ১৯৭১’র ১৭ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা তাঁকে কারাগার থেকে মুক্ত করেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি মওলানা ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান, জুলফিকার আলী ভুট্টো, আতাউর রহমান খান, হাজী মোহাম্মদ দানেশ, মোহাম্মদ তোয়াহা, কমরেড আবদুল হক, কমরেড সুখেন্দু দস্তিদার, কমরেড দেবেন সিকদারের সান্নিধ্য লাভ করেছেন। ১৯৭২ সালে পুনর্গঠিত মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন। ছাত্রজীবন থেকেই ইংরেজি ও বাংলা সংবাদপত্রে লেখালেখি করে আসছেন। জাতীয়তাবাদী চিন্তাভবানার আর্থ-সামাজিক, ঐতিহাসিক ও দার্শনিক ভিত্তি এবং অর্থনীতির নানা প্রসঙ্গ তার সাম্প্রতিক লেখালেখির মূল উপজীব্য।
মাহবুর উল্লাহ্ । জন্ম ৯ ডিসেম্বর ১৯৪৫, নােয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জের তিতাহাজরা গ্রামে। বৈচিত্র্যময় বর্ণাঢ্য জীবনের মানুষ। কর্মজীবন সক্রিয় রাজনীতি থেকে অধ্যাপনা ও গবেষণা পর্যন্ত বিস্তৃত। '৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লবী নেতা। ১৯৭০-এর ২২ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা’র কর্মসূচি উত্থাপনের অপরাধে। ইয়াহিয়ার সামরিক আদালতে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে দীর্ঘ ২২ মাস কারান্তরালে অন্তরীণ থাকার পর ১৯৭১-এর ১৭ ডিসেম্বর মুক্তিযােদ্ধারা তাঁকে কারাগার থেকে মুক্ত করেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি মওলানা ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান, আতাউর রহমান খান, হাজী মােহাম্মদ দানেশ, মােহাম্মদ তােয়াহা, কমরেড আবদুল হক, কমরেড সুখেন্দু দস্তিদার, কমরেড দেবেন সিকদারের সাহচর্যে আসেন । ১৯৭২ সালে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন । ছাত্রজীবন থেকেই ইংরেজী ও বাংলা সংবাদপত্রে লেখালেখি করে আসছেন। জাতীয়তাবাদী চিন্তা-ভাবনার আর্থ-সামাজিক, ঐতিহাসিক ও দার্শনিক ভিত্তি নির্মাণ তাঁর সাম্প্রতিক লেখালেখির মূল। উপজীব্য। ১৯৭৬ থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। ২০০৬ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে নিয়ােজিত থেকে অবসরে যান। পরবর্তীতে ঐ বিভাগের প্রফেসর ও সােনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি রাজস্ব সংস্কার কমিশনের সদস্য ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রাে-ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রীর অধিকারী প্রফেসর মাহবুব উল্লাহ্ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বােস্টন বিশ্ববিদ্যালয় ও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা ও গবেষণা করেছেন। এছাড়া তিনি কানাডার ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার (IDRC), ডেনমার্কের সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ, নেপালের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনটিগ্রেটেড মাউন্টেইন ডেভেলপমেন্ট, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং ইউনাইটেড ন্যাশনস ইউনিভার্সিটির সহযােগিতায় গবেষণা। কাজ করেছেন। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় রচিত তার তেরটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া দেশবিদেশে তাঁর গবেষণা প্রবন্ধসমূহ প্রকাশিত হয়েছে।