একটি সুন্দর পারিবারিক আবহের মধ্য দিয়ে উপন্যাসটির শুরু। কেন্দ্রে রয়েছে চারুলতা, তাকে ঘিরে ডাক্তার স্বামী রূপ ও কিছু প্রিয় মানুষ এবং আরও কিছু চরিত্র। বিয়ের আগে স্বাধীনভাবে কিছু করার স্বপ্ন দেখত চারুলতা। তারই ধারাবাহিকতায় বিয়ের পর স্বামীর কর্মস্থলে স্থানীয় গরিব ও দুঃস্থ পরিবারের নারীদের স্বাবলম্বী করে তোলার উদ্যোগ নেয় সে। আর তা করতে গিয়ে এলাকার কায়েমি স্বার্থবাদী মহলের বাধা ও চক্রান্তের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। এ পর্যায়ে স্বামীর সঙ্গে বোঝাবুঝির ক্ষেত্রে কিছুটা টানাপোড়েনের সৃষ্টি হলেও, তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। উভয়ের গভীর প্রেমময় সম্পর্ক এবং পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধাবোধ সে ভুল বোঝাবুঝিকে ভাসিয়ে নেয়। তবে কাহিনীর একেবারে শেষপ্রান্তে এসে একটি ঘটনার আকস্মিকতায় রূপ ও চারুর দাম্পত্য জীবন বড় রকম বিপর্যয়ের মুখে পড়ে, যখন চারু দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে আত্মসম্মানবোধকে। প্রেমের জন্য যেখানে সে কিছুতেই আর আপোস করে না। এখানে এসে উপন্যাসটি অন্য এক মাত্রা বা ব্যঞ্জনা পায়। উপন্যাসের নায়িকা চারু হয়ে ওঠে পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের প্রতীক। ভাষার সাবলীলতা, বর্ণনার সহজ গতি, সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও কাহিনী বাঁকের টানটান উত্তেজনা উপন্যাসটি পাঠের সময় পাঠককে মুহূর্তের জন্যও অমনোযোগী হতে দেবে না। এটাও এই উপন্যাসের একটি শক্তিশালী দিক। আশা করি, সব শ্রেণীর পাঠকের জন্যই উপন্যাসটি হবে সুখপাঠ্য।
নড়াইল জেলার বড়দিয়া গ্রামে শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা। গান, লেখাপড়া, খেলাধুলা আর আনন্দের মধ্য দিয়ে কাটে শৈশব। আট বছর বয়সে বাবাকে হারালেও মা আর বড় ভাইদের নিবিড় ছায়ায় কাটে জীবন। স্বপ্ন ছিল গানের জগতে নিজেকে সঁপে দেওয়ার। এসএসসি পাস করার পর বড় ভাইয়ের কর্মস্থল চট্টগ্রামে গিয়ে চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও এমবিএ পাস করে ২০০৩ সালে ঢাকায় কর্মজীবন শুরু করেন ব্যাংকিং সেক্টরে।। তারপর বৈবাহিক জীবনে পদার্পণ। ২০০৯ সালে সন্তানের প্রয়ােজনকে গুরুত্ব দিয়ে চাকরি ও গান ছেড়ে পুরােপুরি মাতৃত্বের স্বাদ নেন। বর্তমানে দুই সন্তানের সন্তুষ্ট মা।। ২০১৮ সালে মাকে হারিয়ে নিজেকে সামলাতে কৈশাের ও যৌবনের লালিত শখ লেখালেখিতে মনােনিবেশ করেন।