পরানের গহনতলেও চুল্লি থাকে, থাকতে পারে সাহিত্যের ভাষায়ও—সেখানেও জ্বলতে পারে তুষের আগুন। খোলা চোখে দৃশ্যমান না হলেও তা পুড়িয়ে দিতে পারে যাপিত জীবন। মিথ্যা রটানো কিংবা কুৎসিত গিবত ছড়ানোর মাধ্যমে সেই চুল্লিতে ঢেলে দেওয়া যায় মানুষকে ভস্মীভূত করে ফেলার মতো ভয়ংকর জ্বালানি। না জেনে, না বুঝে, শোনা কুৎসার সত্যতা যাচাই না করে কাছের বন্ধুরাও ভাইরাল করে দিতে পারে মিথ্যা কিংবা ভুল রটনা। আবার হিতৈষীরাও পাশে দাঁড়াতে পারে প্রকৃত বন্ধুর মতোই। একের পর এক এ ধরনের পরিস্থিতি, সংকট, মিথ্যা রটনা, নিষ্ঠুর আর হিংস্র অপমান-অবহেলার মুখোমুখি হতে থাকে এই উপন্যাসের মূল চরিত্র-মিতু। বিশ্ববিদ্যালয়-জীবনে ঢোকার পর বাবাকে হারিয়ে আর্থিক সংকটে জর্জরিত হতে থাকে সে। নিচ প্রবৃত্তিবিশিষ্ট রটনার বিরুদ্ধে লড়াই করে এগোতে থাকে আপন দৃঢ়তা নিয়ে। চারপাশ থেকে সহযোগিতাও পেতে থাকে। শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক সংগঠনের গ্রুপ, পাল্টা গ্রুপের নানা কূট-কৌশলের ভেতর থেকে মানবিক, রাজনৈতিক সাপোর্টও অর্জন করে। ছাত্ররাজনীতি কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়েও ঋদ্ধ হয়ে ওঠে মিতু। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ওঠার নানা ষড়যন্ত্র দূর করে নিজের যোগ্যতায় একসময় সংকট কাটিয়ে সফলতার শিখরেও পৌঁছে যায়। কিন্তু সেখানেও যে রয়েছে আরেক চুল্লি! তেজস্ক্রিয়তার বিপর্যয়ের মতো আবেগের দহনে স্তব্ধ হয়ে যায় মিতু। তার মতো তেজস্বী তরুণীর জীবন কি থেমে যাবে? নাকি অনলবাণ বুকে পুষে এগোতে থাকবে? মনস্তাত্ত্বিক এই উপন্যাসের ভেতর থেকে উত্তর খুঁজে নিতে হবে পাঠককেই। প্রকাশক
তিনি একদিকে কথাসাহিত্যিক, অন্যদিকে মনোশিক্ষাবিদ। ২০১৮ সালে কথাসাহিত্যে পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার। জাপানের ১২তম ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব সাইকিয়াট্রির ফেলোশিপ প্রোগ্রামে নির্বাচিত হন বিশ্বের প্রথম সেরা ফেলো। জন্ম ১৯৬০ সালের ২ জানুয়ারি সাগরকন্যা সন্দ্বীপে। এমবিবিএস করেছেন সিলেট এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে। তিনি সাহিত্য-সংস্কৃতির মাসিক ’শব্দঘর’র সম্পাদক এবং জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (এনআইএমএইচ)-এর একাডেমিক পরিচালক। ২০১২ সালে তাঁর মনস্তত্ত্ব বিষয়ক গ্রন্থ ‘মানব মনের উদ্বেগ ও বিষন্নতা’ কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য করা হয়।