গ্রিক মিথলজিতে আছে - একবার এক তরুণী সূর্যের দেবতা অ্যাপোলোর প্রেমে পড়ল। তরুণীর নাম ক্লাইটি, যে কিনা প্রাচীন শহর ব্যাবিলনের রাজকুমারী ছিল। ক্লাইটির নিবেদন দেখে দেবতাও একসময় ভালোবাসলেন তাকে। তারপর ভালোবাসতে ভালোবাসতে দেবতা ভালোবাসায় ক্লান্ত হয়ে গেলেন। ঐশ্বর্যশালীরা সব যুগেই ওইরকমই। বড়ো অল্পতেই একঘেয়েমি এসে যায় তাদের। ক্ষমতাশালীদের কাছে এসব জাগতিক প্রেম-ভালোবাসার অনুভূতি খুবই তুচ্ছ! অ্যাপোলো অলিম্পিয়াসের দেবতা। পরিত্যাগ করলেন মাটির পৃথিবীর ক্লাইটিকে। পরিত্যক্ত, রিক্ত, অবহেলিত ক্লাইটি তখন দিনের পর দিন এক জায়গাতেই বসে থাকল, ধীরে ধীরে মাথা ঘুরিয়ে অ্যাপোলোকে তার সূর্যের রথে আকাশ জুড়ে চলা দেখার জন্য। ওর সমস্ত চাওয়া ছিল, দেবতা একবার তাকাক ওর দিকে, প্রেমপূর্ণ দৃষ্টিতে দেখুক ওকে! অবশেষে, দেবতা অ্যাপোলো করুণা করেছিলেন তাকে, পূর্ণ শক্তিতে তাকিয়েছিলেন তার দিকে। কিন্তু সেই দৃষ্টিতে ভস্ম হলো সে। অ্যাপলোর তেজে পুড়ে গেল ক্লাইটি এবং তার ছাই থেকে জন্ম হলো মেরিগোল্ডের। যে ভালোবাসার জন্য ক্লাইটি সবকিছু বাজি ধরেছিল সেই ভালোবাসাই তাকে পুড়িয়ে দিলো। অ্যাপোলো যদি আবার তাকে ভালো না বাসতেন, তার কাছে ফিরে না আসতেন তাহলে তো বেঁচে থাকত মেয়েটা! ভালোবাসার চাইতে বেঁচে থাকাটাই কি বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়? আর অ্যাপোলোর কী এলো গেল এতে? সে স্বর্গে ফিরে বীণার তারে মূর্চ্ছনা তুলল! তাতে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে রইল স্বর্গ, মর্ত্য, পাতালের সমস্ত প্রাণী! মেরিগোল্ড অবহেলায় ফোটে, একসময় গ্রীষ্মের তাপে মরে যায়!
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘টুইটুবানির ফুল’ নামের পাঠকপ্রিয় ধারাবাহিক বড়গল্প দিয়ে লেখালেখির শুরু ১৯৮৮ সালে খুলনায় জন্ম নেওয়া আফসানা আশা’র। পড়াশোনা ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে, ভালোবাসার জায়গাও সাহিত্য। ব্যক্তিগত জীবনে এক কন্যাসন্তানের জননী। নিজেকে রঙধনুর মাম্মাম বলে পরিচয় দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।