উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা। বংশীয় আভিজাত্য, সৌন্দর্য ও অনুপম চরিত্রে আরবের অনন্য প্রসিদ্ধ নারী। দ্বীনের জন্য তাঁর ত্যাগ ও কুরবানির ঘটনাগুলো কৃত্রিম রোমাঞ্চকর গল্পের চেয়ে বেশি নাটকীয়। স্বামীপ্রেমী উম্মে সালামা যখন বিধবা হন, তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন আবু বকর-উমরসহ আরবের প্রভাবশালী আরও অনেকেই। তিনি সবার প্রস্তাবই প্রত্যাখ্যান করেন। নবিজির প্রস্তাবেও প্রথমে রাজি হননি। তিনি মনে করতেন, পৃথিবীর আর কোনো পুরুষই আবু সালামার মতো তাঁকে সুখী ও সন্তুষ্ট রাখতে পারবে না। নবিজি তাঁর চার কন্যার দায়িত্ব নিজে গ্রহণ করেন এবং তাঁকে বিয়ে করেন। সৌন্দর্য ও আভিজাত্যে নবিপত্নি আয়েশাও তাঁর সামনে নিজেকে গুটিয়ে রাখতেন। সত্য বলতে তিনি কাউকে পরোয়া করতেন না। তাঁর জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও ফিকহি পাণ্ডিত্যে নবিজি মুগ্ধ ছিলেন। নবিজীবনের একান্ত ঘরোয়া ব্যাপারগুলো তিনি অন্যদের কাছে উপস্থাপন করতেন। নবিপ্রেমী প্রতিটি মানুষের কাছে কৌতূহলীয় পিপাসা নবিজির সংসার। এই সংসারে আছে অভাব-অনটনের সাথে দান-সাদাকার বিস্ময়ে বিমূঢ় হওয়ার সব রূপকল্পের মিশেল। বিশুদ্ধ তথ্যের ভিত্তিতে গল্পভাষ্যের নান্দনিক উপস্থাপনায় আহমাদ সাব্বির এঁকেছেন নবিজীবনের এই অধ্যায়। পৃষ্ঠা উল্টাতে উল্টাতে আপনি বলবেন, কী দারুণ!
আহমাদ সাব্বির এই সময়ের তরুণ লেখক। তার জন্ম ১৯৯৬ সালে ১৪ জুলাই এবং জন্মভূমি মাগুরা সদরের হাওড় গ্রামে। পাইকগাছা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে চলে আসেন খুলনায়। খাদেমুল ইসলাম মাদরাসা থেকে তিনি কুরআনে হাফেজ হন। স্বপ্ন-বিভোর কিশোর অবুঝ সম্মোহনে চলে আসেন যাদুর শহর ঢাকায়, বুঝে ফেলেন জীবন, প্রেম, প্রকৃতি আর মানুষের মধ্যকার সম্পর্কের রহস্য। অবশেষে গল্পের পথ ধরেন। পড়ালেখাও চলতে থাকে সমান তালে। ধর্মীয় শিক্ষার সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহণ করতে করতে ক্লাসিক সাহিত্যের পাঠও সেরে নেন। অল্পবয়সেই কথাশিল্পের চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এরই মধ্যে দু-দুটি মৌলিক বই লিখে শেষ করেছেন।