কবিতা কে তিনি মস্তিষ্কের সূক্ষ্ম তন্ত্র থেকে নির্মাণ করেন। প্রচলিত কাব্য ও কাব্য ভাষাকে সচেতনভাবে এড়িয়ে যেয়ে বিজ্ঞান, জীব ও প্রাণ সৃষ্টির বিপুল রহস্য, যুক্তি এবং পরবাস্তব বোধ কে তিনি নিজের অস্তিত্ব ও বিকাশের সমান্তরালে স্থান দেন। তাঁর নিজস্ব জীবন বোধের সাথে কবিতার ভাষা, উপমা, বলার ভঙ্গি ক্রমাগত অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বের ভেতর আসতে থাকে। তিনি সচেতনভাবেই তাঁর কবিতায় অস্তিত্ববাদ, পরাবাস্তববাদ এবং মরমিবাদ এর পরিমিত মিশ্রণ ঘটিয়েছেন, যেখান থেকে সৃষ্টি হয়েছে তাঁর বিচিত্র এবং ব্যতিক্রম আঙ্গিকের কবিতা। কবিতা বিষয়ক তাঁর চিন্তা, উপলব্ধি, প্রকাশ একান্তই তাঁর নিজের- বৈচিত্র্যময় এবং বেপরোয়া এক সম্ভাবনা। তাঁর কবিতায় জীবনের অর্থ হচ্ছে ক্রমাগত ক্ষত-বিক্ষত হয়েও সামনের দিক পথ চলতে থাকা, এবং জীবন যন্ত্রণাদায়ক হওয়ার পরেও তার সাথে আরও কিছু দূর এগিয়ে যাওয়া, সেই সাথে হারতে হারতে জিতে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করা। তিনি সাধারণ জীবন যাপনের বলা এবং না বলার মাঝে থাকা কথার সূক্ষ্ম ফাঁক গুলো পর্যবেক্ষণ করেন এবং তা কবিতায় মূর্ত করে তোলেন। বিষয়ের ভেতর ভাবের বিচিত্র কারুকাজ, বুদ্ধিদীপ্ত, সংযত এবং সংহত আবেগের প্রকাশ তাঁর লেখার বৈশিষ্ট্য। মেদ ও অতি কথনের দোষমুক্ত তাঁর কবিতা সাবলীল এবং প্রাণবন্ত। শব্দ প্রয়োগ তীক্ষ্ণ; তীব্রভাবে তা নিজের ভেতরের অন্তর্নিহিত ভাব প্রকাশ করে। তাঁর কবিতার বিষয়বস্তু নির্বাচন বৈচিত্র্যময়। একটা ক্ষুদ্র কীট থেকে প্রাচীন উপাখ্যান পর্যন্ত তিনি নির্লিপ্তভাবে পরিভ্রমণ করেন। মানুষের শুদ্ধ-অশুদ্ধ দুই ধরনের আবেগ তাঁর কবিতায় মূর্ত হয়ে আছে, একই সাথে ছন্দের ব্যবহার লক্ষণীয়ভাবে দৃষ্টিগোচর হয়। অক্ষরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত, স্বরবৃত্ত সাথে ফ্রিভার্সও তিনি ব্যবহার করেছেন কবিতার নির্মাণ শৈলীতে।