দীপু জিসান প্রবাল। একসাথেই ভর্তি হয়েছিল ঢাকা ল্যাবরেটরিতে। রাজধানীর তিন প্রান্তে তিন জনের বাসা। দীপুদের বাসা পুরান ঢাকার ওয়ারী, হেয়ার স্ট্রিটে। দীপুর বাবা কলেজের অধ্যাপক। জিসানদের বাসা কল্যাণপুর। তার বাবা ব্যাংকার। আর প্রবালদের বাসা মগবাজার, নিউ ইস্কাটন। তার বাবা সাংবাদিক। একই ক্লাসে পাশাপাশি বসায় অল্পদিনেই ওদের মধ্যে নিবিড় বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। পড়াশোনাতেও কেউ কারো চেয়ে কম না। প্রায় সমান সমান মার্কস পায় পরীক্ষায়। ওদের বন্ধুত্বের কারণে ওদের বাবা-মায়ের মধ্যেও সখ্য সম্পর্ক হয়ে ওঠে। এই সখ্য একসময় পারিবারিক সখ্যে রূপ নেয়। তিনজনই ভালো ছাত্র হওয়ায়, ওদের বন্ধুত্বের বাঁধন বেশ দৃঢ় হয়। ওদের বাবা-মাও চান ওরা একসাথে বেড়াক, খেলুক, পড়াশোনা নিয়ে আলাপ করুক। এভাবেই পাঁচ বছর ধরে ওরা সহপাঠী, প্রিয়বন্ধু। এখন ওরা ক্লাস এইটের ছাত্র। ওরা পড়াশোনাতেই শুধু মেধাবী নয়, তিনজনই ভালো ক্রিকেটার। ঢাকার ইন্টার স্কুল ক্রিকেটে তাদের স্কুল-টিমের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনে এদের তিনজনের অবদান সবচেয়ে বেশি। দীপু ও জিসান ব্যাটিং অলরাউন্ডার, আর প্রবাল স্পিন বোলার। ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হয়েছে এরা বেশ ক’বার। বিতর্কে বিজয়ী হয়ে পুরস্কার পেয়েছে। এজন্য স্কুলে তাদের বেশ সমাদর। স্যাররাও এদের খুব স্নেহ করেন। খেলা ও লেখাপড়ায় সেরা হওয়ার জন্য তিন জনের মধুর প্রতিযোগিতা চলে। পুরস্কারের অনেক মেডেল ও ক্রেস্টে ওদের শো-কেস ভরে গেছে। আর ক্লাসের পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক বইও পড়ে এরা। তিনজনেরই প্রিয় বিষয় অ্যাডভেঞ্চার আর রহস্যকাহিনি। অ্যাডভেঞ্চার-রহস্যকাহিনির বই পেলেই সময় বের করে পড়ে নেয়।
অপু বড়ুয়া লেখালেখি ও সংস্কৃতি জগতের একটি পরিচিত মুখ। মূলত শিশুসাহিত্যের একজন নিবেদিত প্রাণ লেখক। দীর্ঘ সময় ধরে লিখে চলেছেন ছড়া, কবিতা, গল্প। দেশের-পত্রিকা সাময়িকীতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ছাপা হচ্ছে তাঁর লেখা। লেখালেখির চমৎকারিত্বের জন্য ইতোমধ্যে সম্মানিত হয়েছেন অনেক পুরস্কার সম্মাননায়। বেরিয়েছে তার মজাদার মনকাড়া গ্রন্থ: আকাশে রঙিন ঘুড়ি, আয়রে ছুটে আয় প্রিয় জলদী গাঁয়, রঙের তুলি কর্ণফুলি, আঁকার ভাষা লেখার ভাষা, শৈলী ও পরির গল্প, পেতনি ভূতের কাণ্ড, মাগো আমি যুদ্ধে যাব, একুশ ও স্বাধীনতার গল্প, ছোটদের প্রিয় বঙ্গবন্ধু। তার সৃজনশীল সাহিত্যকর্ম জুড়ে রয়েছে শিশুতোষ মন-মানস, হাসিখুশির মৌতাত, ছেলে ভুলানো ভ‚ত-পেতনি-পরির অবাক করা বিষয় বৈচিত্র্য বর্ণনা, যা পাঠককে মোহিত করে নিমিষেই। শুধু লেখালেখির ক্ষেত্রবিশেষ নয়, অপু বড়ুয়া একজন সংগীত শিল্পীও, বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের একজন তালিকাভুক্ত গীতিকার। বন্ধুসুলভ হাসিখুশি মুখরতার অনন্যজন অপু বড়ুয়া ঘুরে বেড়িয়েছেন ভারত, থাইল্যান্ড, জাপান, আরও অনেক দেশ। বাবা অনন্ত মোহন বড়ুয়া, ও মা শচী রানী বড়ুয়া’র সন্তান অপু বড়ুয়া, পেশাগত জীবনে বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রকৌশলী পদে কর্মরত। অপু বড়ুয়া’র বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী পৌরসভার জলদী গ্রামে। তার স্ত্রী পাপড়ী বড়ুয়া একজন কৃষি কর্মকর্তা। তাদের দুই সন্তান, পুত্র- পার্বণ বড়ুয়া, কন্যা- শৈলী বড়ুয়া ।