"চিরসখা" বইয়ের ফ্ল্যাপের কথা: বর্তমান এবং অনতিঅতীত, একটি ফেলে আসা সময় আর উত্তর চব্বিশ পরগনা তথা কলকাতা শহর যথাক্রমে এই দীর্ঘ কাহিনীর কাল ও পটভূমি। অজানা প্রতিভা আর অসামান্য সাহসে ভর করে শূন্য থেকে শিল্পের অচিন আর বন্ধুর পথে যাত্রা করেছিল এক স্বপ্নসন্ধানী প্রায়-যুবক বিভাস, দেশবিভাগের পূর্ববর্তী কালবেলায়। অনিবার্য দারিদ্র্য, সামাজিক বাধা আর রাজনীতির টানাপড়েনে যে দিশাহারা, আপন অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য তাকেও খুঁজে পেতে হয় একটা হৃদয়ের আশ্রয়, একটা অবলম্বন। কে দেয় তাকে সেই অবলম্বন ? অপর্ণা? ইতু? তার সন্তান-সন্ততি? নাকি অন্য কেউ? কেবলই ছড়িয়ে যাওয়া এই প্রশ্নের উত্তর একটাই, যে ভালবাসে সে-ই দেয় আশ্রয়। সে ভালবেসে রিক্ত হয়, রক্তাক্ত হয়, অথচ নিজস্ব বিশ্বাস আর উপলব্ধি থেকে সরে আসে না। একাকী দূরাগত নক্ষত্রের মতাে এক স্নিগ্ধ আলাের বিকিরণ বিভাসের জীবনে। চিরসখা' উপন্যাস সেই শূন্য থেকে ভালবাসার মানুষটির দিকে হাত বাড়িয়ে দেওয়া। আবার মৃত্তিকাসংলগ্ন, আলাে-আঁধারি জীবনচর্চারও নিবিষ্ট অন্বেষণ। বহু খ্যাত-অখ্যাত, চেনা-অচেনা, ঘরের-বাইরের, অতীত ও বর্তমানের নানা চরিত্রের আনাগােনা এই উপন্যাসে। প্রবহমান ঘটনা ও কাহিনীর মধ্যে দিয়ে খোঁজার চেষ্টা হয়েছে জড়িয়ে পড়া সেইসব মানুষদের সাফল্য-ব্যর্থতা, পাওয়া-হারানাে, পাপবােধ কিংবা অসহায়তার দ্বন্দ্বদীর্ণ আকুতিও। এক ধ্রুপদী জীবন ও শিল্পের প্রেক্ষাপটে রচিত এইসময়ের বহুচর্চিত উপন্যাস ‘চিরসখা'।
Nabokumar Bosu (১০ ডিসেম্বর, ১৯৪৯) একজন বাঙালি সাহিত্যিক এবং ডাক্তার। তিনি বিখ্যাত সাহিত্যিক সমরেশ বসুর পুত্র। অভাবের মধ্যে তাঁর বাল্যকাল কাটে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমএস উত্তীর্ণ হওয়ার পর শল্যচিকিৎসক হিসাবে পেশা শুরু করেন। ১৯৯৩ সালে তিনি ইংল্যান্ডে প্রবাসী হন। ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর লেখা ছোটগল্প দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তাঁর পিতা সমরেশ বসু এবং মাতা গৌরী বসুর জীবনের উপর ভিত্তি করে তাঁর 'চিরসখা' উপন্যাসটি দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।