ফ্ল্যাপে লিখা কথা ভারতের কোটি কোটি মানুষ তাদের ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে পরম মমতায় বলতে পারেন যাকে বাপু- জাতির জনক কি মহাত্মাজি, তিনি আসলেই ছিলেন এক মহৎ আত্মা। জন্ম এক সাধারণ সম্পন্ন পরিবারে। ব্রিটিশ ভারতের প্রায় পাঁচশো করদরাজ্যের অন্যতম গুজরাটের পোর বন্দরের রাজ-আমত্য করম চাঁদের চতুর্থ স্ত্রীর সন্তান। কোনো স্টেলার অ্যাকাডেমিক অ্যাচিভমেন্টে ধীমান হিসেবে পরিচিতি ছিল না। স্থানীয় হাইস্কুল থেকে সাদামাটা রেজাল্টের ম্যাট্রিক, তারপর সেকালের দস্তর মাফিক ১৬ বছরেই বিয়ে, এক বছরে ছোট কস্তুরি বাঈ, কস্তুররা, শেস অবধি শুধুই ‘র’-এর সাথে এবং সম্পন্ন পরিবারের প্রত্যাশা অনুযায়ী আইন পড়ার জন্য লন্ডন ইউনিভার্সিটি কলেজে। যথাসময়ে ইনার টেম্পল হতে ব্যারিস্টার হয়ে লন্ডন ও ওয়েলসের বারে নাম লিখিয়েও ফিরে আসেন দেশে। একটি হাইস্কুলের খণ্ডকালীন শিক্ষাকতার চাকরি জোটাতে ব্যর্থকাম হয়ে পোর বন্দরের আদালতে বাদী-বিবাদীর হয়ে আর্জি লিখে জীবিকা নির্বাহ। দক্ষিণ আফ্রিকার ভারবানোর মাতালে এক দেশি কোম্পানীর আইনগত দিক দেখার জন্য এক বছরের চুক্তিতে ভারত ত্যাগ। ১৯০৬ সালে জুলুদের বিরুদ্ধে ইংরেজদের যুদ্ধে তিনি ব্রিটিশের পক্ষ হয়ে অংশগ্রহণের আবেদন জানান। মাতালে ভারতীয়দের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষার জন্য তিনি প্রতিষ্ঠা করেন মাতাল ইন্ডিয়ান কংগ্রেস (১৮৯৪)। ১৯১৫ সালের প্রথম মহাযুদ্ধের সময় মাতাল ছেড়ে স্থায়ীভাবে চলে আসেন ভারতে।
অসহযোগ আন্দোলনের তুঙ্গ মুহূর্তে উত্তর ভারতের চৌরিচেয়ায় সহিংসতা ঘটে (ফেব্রুয়ারি, ১৯২২)। এ কারণে গান্ধীজি তার আন্দোলনের ডাক প্রত্যাহার করে নেন। অন্যদিকে এই সহিংসতার জের হিসেবে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে (১০ মার্চ, ১৯২২)। বিচারে দু’বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। তবে অসুস্থতা হেতু দু’বছর কারাভোগের পর মুক্তি পান (ফেব্রুয়ারি, ১৯২৪)। গান্ধীজি ছিলেন সমকালীন উত্তেজনা ও ঘটনাবহুল রাজনীতিতে একাধারে ক্ষুরধার প্রজ্ঞাসম্পন্ন কৌটিল্য, অন্যদিকে রাজপুত্র সিদ্ধার্থ সমান নিরাসক্ত ধ্যানযোগী।