মৎস্যকুলের মধ্যে ইলিশই শ্রেষ্ঠ কিনা তা' নিয়ে মৎস্য রসিকদের মধ্যে দ্বিমত থাকলেও মৎস্যকুলের প্রথম শ্রেণীর মাছের মধ্যেই যে এর অবস্থান তাতে কোনও সন্দেহ নেই। বিশেষ করে গঙ্গা তথা ভাগীরথী তথা হুগলী নদীর স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় এই যাযাবর শ্রেণীর মাছ কেবল ভারত বিখ্যাতই নয়, বিশ্ববিখ্যাত। তবে ওপার বাংলার পদ্মার ইলিশও কোন অংশে কম যায় না। এমনি একটা প্রায় দু'কেজি ওজনের মস্তবড় ইলিশ নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত। তবে কেবল ঐ মাছটাই নয়, ঐ সঙ্গে জড়িয়েছিল গঙ্গার মোহনা থেকে দশ-বারোজন মানুষের বেঁচে আসার কাহিনী। একশ' কুড়ি-পঁচিশটি পরিবার নিয়ে জেলেদের গ্রাম শুকমারী কলোনী। গাঁয়ের একমাত্র পাকা বাড়িটির মালিক আদিনাথ কৈবর্তের বাইরের ঘরে মাদুরের ওপর বসে গাঁয়ের একদল ছেলে মেয়ে। চোখ তাদের ঘরের শেষ প্রান্তে রাখা রঙিন টি.ভি-র পর্দার দিকে। ইলেকট্রিক নেই গ্রামে। তাই আদিনাথের টি.ভি. চলে ব্যাটারিতে। খরচ একটু বেশি হলেও উপায় নেই। একে পঞ্চায়েত প্রধান, তারওপর আবার শুকমারী মৎস্য সমবায় সমিতির প্রেসিডেন্ট। এমন মানুষের স্ট্যাটাস বজায় রাখতে হলে এই ধরনের একটু-আধটু বাড়তি খরচ তো করতেই হয়। পৈত্রিক 'কৈবর্ত্ত' টাইটেল পাল্টে 'দাস' হয়েছে আদিনাথ। লোকে বলে আদিনাথবাবু। এমনকি সরকারী মৎস্য দপ্তরের প্রোজেক্ট অফিসার মণিময় দত্ত পর্যন্ত খাতির করেন তাকে।