পন্ডিত চাণক্য নাকি সে-কালে উপদেশ দিয়েছিলেন— স্ত্রীলোক ও রাজকুলকে বিশ্বাস করা উচিত নয় । অবলা স্ত্রীলোকের কথা না হয় ছেড়েই দিলাম, কিন্তু সবল রাজলকে বিশ্বাস না করার ব্যাপারটাই গুরুতর। অবশ্য একালে রাজকূল বলে কিছ, না থাকলেও রাজপর ষের অভাব নেই ৷ প্রতিটি সরকারী কর্ম চারীই এক-একটি ক্ষব্দে রাজপুরুষ, আর সেই সূত্রে আমি নিজেও। কাজেই চাণক্য পণ্ডিতের কথায় সেদিন মনে মনে ক্ষুব্ধ হওয়া আমার পক্ষে মোটেই বিচিত্র ছিল না । বাইরের লোকের কথা না হয় ছেড়েই দিলাম, কিন্তু সারদার পলিশ ট্রেনিং কলেজের ইন-টাক্টর খোদ মরারীবাব, একদিন ক্লাশে বসে আমাদের যে উপদেশ দিয়েছিলেন তা শুনে সেদিন তাজ্জব বনে গিয়েছিলাম। অল্প কথার মানুষ মরারীবাব, সেদিন কথায় কথায় বলেছিলেন, বঝলে বাপ, পালিশের চাকরি । এতে বিশ্বাস করতে নেই কাউকে। মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী পত্র কাউকে বিশ্বাস করা চলবে না । এমন কি নিজেকেও নয় । মরারীবাব, সেদিন কথাটা কিসের পরিপ্রেক্ষিতে বলেছিলেন তা আজ আর আমার মনে নেই, তবে তা যে ওই চাণক্য পণ্ডিতের উপদেশের সমগোত্রীয় তাতে কোন সন্দেহ ছিল না। চাণক্য পণ্ডিত জনসাধারণকে উপদেশ দিয়ে- ছিলেন সবাইকে অবিশ্বাস করতে ৷ এই বিশ্বাস-অবিশ্বাসের কথাটাই সেদিন কেন যেন বারে বারে মনে পড়ছিল আমার। সেদিন মানে, যেদিন আমি ও আমার বন্ধ, প্রলয় সরকার ধড়াচূড়ো পরে থানার জয়েন করতে বেরিয়েছিলাম ।