‘ভাষার ছড়া দেশের ছড়া’ বইয়ের নাম পড়লেই খুব সহজেই বোঝা যায় ছড়াগুলোর বিষয়। ৩২ পৃষ্ঠার এ বইটিতে ২৭টি ছড়া সূচিবদ্ধ রয়েছে। বাংলা ভাষার ছড়া, বাংলাদেশের ছড়া এগুলো। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা। এ ভাষায় কথা বলতে আমরা সবাই অভ্যস্ত। কিন্তু ১৯৫২ সালে তৎকালীন পাকিস্তানি সরকার ঘোষণা দেয় যে, উর্দু হবে রাষ্ট্র ভাষা! কিন্তু এ দেশের ছাত্র জনতা এ আদেশ অমান্য করে। প্রতিবাদী মিছিল নিয়ে তারা যখন রাস্তায় নামে, সেই মিছিলে চালানো হয় গুলি! গুলিতে শহিদ হন রফিক, সফিক, জব্বার, সালাম, বরকতসহ আরো নাম না জানা অনেক ভাষাসংগ্রামী! ‘ভাষার জন্যে লড়াই করে জীবন দিলো ভাইরা আমার প্রাণের প্রিয় মাতৃভাষা সেই ভাষাতে গাঁথলো যে হার।’ বইটির প্রথম ছড়া ‘শহীদ মিনার’ নামক ছড়া থেকে নেওয়া এই পঙ্ক্তিগুলো। ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, মায়ের ভাষা, অ আ ক খ, ফাগুন মাসের গান, একুশের ছড়াসহ আরো অনেক ছড়া রয়েছে বইটিতে। নীহার মোশারফ এর লেখা এ ছড়ার বইটি প্রকাশিত হয়েছে ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সালে। বইটিতে বায়ান্ন ও একাত্তর ঘটনা নিয়েই ছড়াগুলো নির্বাচন করা হয়েছে। একুশের পথ ধরেই একাত্তরের বিজয় আসে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা লাভ করি। ‘স্বাধীনতার ভিত’ ছড়ায় ছড়াকার নীহার মোশারফ লিখেছেন― ‘আমার মায়ের জন্মভূমি একাত্তরের মূল মূলের ভেতর জন্ম নেওয়া বাংলাদেশের ফুল। আমার মায়ের শক্তি সাহস স্বাধীনতার ভিত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে আমি গাই বিজয়ের গীত।’ বাংলাদেশের ইতিহাসে বায়ান্ন ও একাত্তর দুটি প্রধান ভিত। আমাদের মাতৃভাষা রক্ষার আন্দোলন আজ ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশও আজ বিশে^র মানুষের কাছে একটি বিস্ময়ের নাম। জাতি হিসেবে এ আমাদের অহংকার। কিন্তু এ অহংকারকে ধরে রাখতে গেলে আমাদের বাংলা ভাষার চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের দৈনন্দিন কাজের থেকে শুরু করে সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আগামী প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে দেশপ্রেম আর মাতৃভাষার প্রতি নিবেদিত করে। ছন্দময়, স্মৃতিময় আর সৃষ্টিশীল এই ছড়াগুলো একুশে ফেব্রুয়ারি ও স্বাধীনতা দিবসে আবৃত্তি করে আমাদের নিজেস্ব প্রতিভাকে তুলে ধরতে পারব সবার মাঝে।
ইলশে নদীর তীর ঘেঁষা একটি দ্বীপজেলা ভােলা। ভােলা জেলার বােরহানউদ্দিন উপজেলার ছােট্ট শ্যামলিমা গ্রাম চকঢােষ। সেই গ্রামের কবি নীহার মােশারফ। বাবা আবদুল জলিল মিয়া বেঁচে নেই। মা আনােয়ারা বেগম। বাবার চোখের মণি আর মায়ের স্নেহের আঁচলে বেড়ে ওঠা এই কবি ছেলেবেলা হতেই লেখে আসছেন। নব্বইয়ের শেষদিকে কবির লেখালেখিতে পদার্পণ। লেখেন- কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, ছড়াসহ অনেক বিষয় নিয়ে। লেখেন দুই বাংলায়। কলকাতার দেশ আরম্ভ, কবিসম্মেলন, টুকলু, কবিতাসীমান্ত সঞ্চিতা, ভারতবিচিত্রাসহ অসংখ্য পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে তার কবিতা।। আগামী প্রজন্মের জন্য কবির শিল্পময় সাহিত্য আশার প্রদীপ হয়ে উঠুক।। প্রকাশিত গ্রন্থ : কবিতা : জলপাই রঙে ঘেরা অর্ধদুপুর, নগ্ন শরীর লজ্জার নয় শিশু-কিশাের গল্প : যায়া ও নীলপরি ভূত-ভুতুড়ে বন্ধুপাখি ছড়া : রূপকথার রাজকন্যা