ফ্ল্যাপে লিখা কথা অনুবাদ সম্পর্কে একটি কথা আছে যে, ‘অনুবাদ হল মেয়েদের মতো, সুন্দরী হলে বিশ্বস্ত হয় না, বিশ্বস্ত হলে সুন্দরী হয় না’। অনুবাদের চরিত্র সম্পর্কে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মেয়েদের প্রসঙ্গ এভাবে কে এনেছিলেন তা আমরা জানি না, তবে এরকম বিশ্লষণ যে সামন্তবাদী ধারাণাপ্রসূত তাতে মোটেও সন্দেহ নেই।
তবে অনুবাদের প্রকৃতি বুঝতে সম্ভবত এই বিশ্লেষণের জুড়ি নেই। বস্তুত এই বিশ্লেষণ থেকেই আক্ষরিক অনুবাদ ও ভাবানুবাদের পার্থক্যটি পাঠক বুঝতে পারে। এক ভাষায় শিল্প-সাহিত্য অন্য ভাষায় অনূদিত হয়ে কতোটা রস প্রবাহ ও সিঞ্চন সম্ভব তা নিয়ে সাহিত্যমহলে বিশেষ কোনো বিতর্ক নেই, বরং বরাবরের মতোই প্রশ্ন এখনো উঠে আসছে।
তবু অনুবাদের মাধ্যমেই বিশ্বসাহিত্যের আবহ দেশ থেকে দেশান্তরে, ভাষা থেকে ভাষান্তরে গড়ে উঠেছে। বাংলাভাষার বিখ্যাত সব লেখক-কবি-সাহিত্যিকদের অনেক শিল্পকর্ম বিদেশি বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে, আবার বিশ্বসাহিত্যের প্রচুর শিল্পকর্ম বাংলাভাষায় অনূদিত হয়ে এই ভাষার পাঠকের চাহিদাকে নানাভাবেই পূরণ করা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে।
বাংলাভাষঅয় বিশ্বসাহিত্যের চিরায়ত শিল্পকর্মের যেসব গ্রন্থাবলি অনূদিত হয়েছে তার মধ্যে ম্যাক্সিম গোর্কির ‘মা’ উপন্যাস অন্যতম।
(মার্চ ২৮, ১৮৬৮ – জুন ১৮, ১৯৩৬) বিখ্যাত রুশ সাহিত্যক। তিনি নিজেই তার সাহিত্যক ছদ্মনাম হেসেবে বেছে নেন 'গোর্কি' অর্থাৎ 'তেতো' নামকে। তার অনেক বিখ্যাত রচনার মধ্যে মা একটি কালজয়ী উপন্যাস। প্রথম জীবন মাক্সিম গোর্কি নিঞ্জি নভগরদ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ৯ বছর বয়সে পিতৃমাতৃহীন হন। ১৮৮০ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি তার দাদীমাকে খুঁজতে গৃহ ত্যাগ করেন। ১৮৮৭ সালে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান এবং দীর্ঘ ৫ বছর ধরে পায়ে হেঁটে সমগ্র রাশিয়া ভ্রমন করেন। তিনি ১৮ জুন ১৯৩৬ (৬৮ বছর) সালে মৃত্যু বরণ করেন।