পল্লীভ্রমণ বইটিতে লেখক মৃত্যুঞ্জয় রায় বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলের জীবন, জনপদ, জীববৈচিত্র্য ও নিসর্গের এক নিখুঁত বর্ণনা তৈরি করেছেন। পড়তে পড়তে মনে হবে, যেন আপনি এ গ্রাম থেকে ও গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, গল্প করছেন গ্রামের মানুষদের সাথে আর দেখে নিচ্ছেন সেসব গ্রামের বর্তমান ছবিগুলো। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের গ্রামগুলোর চেহারা বদলাতে শুরু করেছে। গ্রামেও এখন শহরের আধুনিক হাওয়া লেগেছে। পুরোপুরি বদলে যাওয়ার আগেই আমাদের শ্বাশ্বত শ্যামল পল্লীর রূপকে দেখে নেয়া দরকার। সত্যি বলতে কি, আমরা হয়তো আমাদের নিজের গ্রামটাকেই এখনো ঠিক মতো চিনতে পারিনি। পল্লীভ্রমণ বইটি আমাদের সেসব চেনার পথ দেখাতে পারে। পল্লীভ্রমণ বইটি বর্তমান পল্লীবাংলার এক অসামান্য দলিল। দিনে দিনে এ দেশের গ্রামের চিত্র বদলে যাচ্ছে। আগামি ১০০ বছর পর হয়ত এ দেশের বর্তমান গ্রামকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। তখন এ বইটি হবে বর্তমান পল্লীবাংলার একটি ইতিহাস গ্রন্থ। বিগত ২০১০ সালে লেখক এ বইয়ে উল্লেখিত গ্রামগুলো ঘুরেছেন, একজন পর্যটকের দৃষ্টিতে গ্রামের নানা বৈচিত্র্যকে তিনি লক্ষ্য করেছেন নিবিড়ভাবে। ২০১১ সালে এ লেখাগুলো ধারাবাহিকভাবে ‘সাপ্তাহিক ২০০০’ পত্রিকায় মোট ৩৮ পর্বে প্রকাশিত হয়েছে। এ বইটি সেসব লেখারই সংকলন।
কৃষিবিদ মৃত্যুঞ্জয় রায় প্রায় তিন দশক ধরে বিভিন্ন জাতীয় পত্র-পত্রিকায় লিখছেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে এম.এসসি.এজি (উদ্যানতত্ত্ব) ডিগ্রি অর্জন করেন। পেশাগতভাবে তিনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে। সর্বশেষ অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর রয়েছে কৃষিক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে কাজ করার সুদীর্ঘ বাস্তব অভিজ্ঞতা ও ফসল উৎপাদনের বিশেষ পারদর্শীতা, শিক্ষকতা ও প্রশিক্ষণের দক্ষতা। এর ওপর ভিত্তি করে তিনি লিখেছেন ‘বাংলাদেশের অর্থকরী ফসল’ বইটি।। কৃষি বিষয়ে তিনি ইতােমধ্যে অনেকগুলাে বই লিখেছেন। এ পর্যন্ত তাঁর লেখা ৮৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে যার মধ্যে ৬২টি বই কৃষি বিষয়ক। কৃষি বিষয়ক লেখালেখির জন্য তিনি ২০১২ সালে পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার এবং ২০১৮ সালে পেয়েছেন বাংলাদেশ একাডেমী অব এগ্রিকালচার স্বর্ণপদক।