তামাদি আইন, ১৯০৮ (Limitation Act, 1908) হল একটি ভারতীয় আইন যা বর্তমানে বাংলাদেশে প্রযোজ্য। এই আইনটি বিভিন্ন ধরনের দেওয়ানি মামলার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়, যার মধ্যে যে কোনো পক্ষকে মামলা দায়ের করার সময়সীমা উল্লেখ থাকে। আইন অনুযায়ী, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে মামলা দায়ের না করলে আদালত সেই মামলা গ্রহণ করবে না, এবং এর ফলে পক্ষটির অধিকার খর্ব হতে পারে।
তামাদি আইনের প্রধান কিছু দিক: 1. তামাদির সময়সীমা: তামাদি আইন প্রতিটি মামলার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে, যার মধ্যে মামলা দায়ের করতে হয়। সাধারণত, এই সময়সীমা ৩ বছর থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের মামলার জন্য ভিন্ন হতে পারে, যেমন সম্পত্তি সম্পর্কিত মামলায় ১২ বছর, ঋণ আদায়ের মামলায় ৩ বছর ইত্যাদি। 2. তামাদি শুরুর সময়: তামাদি শুরুর সময়সীমা নির্ধারণের জন্য ঘটনা বা কারণের প্রকৃতি বিচার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ঋণ আদায়ের জন্য সময়সীমা সেই দিন থেকে গণনা শুরু হয় যেদিন ঋণ পরিশোধের তারিখ থাকে, অথবা যেখানে অভিযোগ করার কারণ সৃষ্টি হয়। 3. বিচারিক সিদ্ধান্ত: তামাদি আইন অনুসারে, নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে গেলে মামলা দায়ের করা হলে, আদালত সাধারণত সেই মামলা গ্রহণ করে না। তবে কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে আদালত মামলা গ্রহণ করতে পারে যদি তা ন্যায়সঙ্গত হয়, যেমন প্রতারণা বা ভুলের কারণে সময়সীমা পেরিয়ে গেছে। 4. ব্যতিক্রম: কিছু ক্ষেত্রে তামাদি আইন প্রযোজ্য নয়। যেমন, অপরাধমূলক মামলা বা যেখানে রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলো রয়েছে সেখানে এই আইন প্রযোজ্য হয় না। 5. তামাদি পুনঃস্থাপন: কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে সময়সীমা পুনরুদ্ধার বা পুনঃস্থাপন করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি মামলা দায়েরকারী সময়মত মামলা করতে পারেনি কারণ তিনি প্রয়োজনীয় তথ্য বা প্রমাণের অভাবে ছিলেন, তবে আদালত সেই মামলা গ্রহণ করতে পারে।