আমাদের কথা সমগ্র মানব জাতিকে দুনিয়া ও আখেরাতে শান্তি ও মুক্তির সন্ধান দিয়েছে ইসলাম। বিশ্বব্যাপী ইসলামের প্রসার হয়েছে তার সৌন্দর্যের কারণে। বিদ্বেষীরা বলে, ইসলাম প্রতিষ্ঠায় শক্তি প্রয়োগের কথা; কিন্তু ইতিহাস বলে, ইসলামের প্রসার হয়েছে কেবলই তার সৌন্দর্যের কারণে। শাশ্বত জীবন-বিধানকে জেনে বুঝে যারা নিজেদের জীবন পরিচালনা করেছে; তাদের অসাধারণ সুন্দর জীবন-যাপন পদ্ধতি দেখে বঞ্চিত পথহারা মানবাত্মা পতঙ্গের মতো ছুটে এসেছে ইসলামের সুমহান ছায়াতলে। ভাগ্যবান আরব ভূখণ্ডের অনেক পীর, মাশায়েখ এই উপমহাদেশে ইসলাম প্রচার করে গেছেন। রাজা তাঁর রাজত্ব ছেড়ে ছুটে এসেছেন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দীনের দাওয়াত নিয়ে। বক্ষ্যমাণ উপন্যাসটি তেমনি এক ঐতিহাসিক চরিত্রকে কেন্দ্র নির্মাণ করেছেন প্রবীণ কথাশিল্পী শফীউদ্দীন সরদার। লেখক এখানে ইতিহাসই তুলে ধরেছেন গল্পের ঢংয়ে, বাস্তব চরিত্রের রূপায়নে।
চাপাপড়া ইতিহাসের কংক্রিট দরোজা যেসব দরদী ঐতিহাসিক নিপুণ হাতে সাহিত্যের হাতুড়ি-শাবল চালিয়ে আলগা করেছেন তাঁদের অন্যতম এক দক্ষ কারিগর শফীউদ্দীন সরদার। আল্লাহ তায়ালার কাছে হাজার শোকর, বর্ষীয়ান এ কর্মবীরের শেষ কয়েকটি বই আমরা প্রকাশ করতে সমর্থ হয়েছি। এ শুধু আমাদের প্রতি তাঁর আন্তরিক স্নেহ-ভালোবাসা আর দোয়ার বরকতেই সম্ভব হয়েছে। প্রায় দুইশ’ বছরের বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসনের যাঁতাকলে নিষ্পেষিত এই উপমহাদেশের সত্যিকার ইতিহাসের উপর যতটা অবিচার হয়েছে, পৃথিবীর অন্য কোনো জনপদে এমন দৃষ্টান্ত বিরল। এখানে হিরোকে জিরো আর খলকে হিরো বানিয়ে পূজা চলেছে অনেক। সাম্রাজ্যহারা মুসলিম জনগোষ্ঠী শুরু থেকেই বৃটিশদের প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় এই দুইশ’ বছর ছিলো কেবলই মুসলমানদের জন্যে এক জুলমতের জামানা। সে জামানার ইতিহাসের পরতে পরতে লুকিয়ে থাকা উপাত্ত নিয়ে উপন্যাস সৃষ্টি করেছেন জাতির দরদি এই কথাশিল্পী।
আশা করি শেকড়সন্ধানী ঔপন্যাসিক শফীউদ্দীন সরদারের ভক্ত অনুরক্ত পাঠকরা আওয়ারা উপন্যাসটি পড়ে ভিন্ন স্বাদের আমেজ পাবেন। আর ইতিহাস-অন্বেষী পাঠকের জন্যে এটি একটি অসাধারণ সংগ্রহ হিসেবেও বিবেচিত হবে নিঃসন্দেহে। আমরা সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করি।