"স্ট্রেস" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ এই বইটা আমি কেন পড়বাে? আপনার জীবন কতটা স্ট্রেসপূর্ণ? প্রথমেই ভাবুনতাে এই মাসটি কেমন ছিল আপনার জন্য? এবার নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর দিন। ০১. আমি প্রায়শঃ দুশ্চিন্তা বা চাপ অনুভব করি। ০২. আমি প্রায়ই দুঃখিত, বিষন্ন বা নিরাশায় আক্রান্ত হই। ০৩. আমি প্রায়ই নিজেকে দোষী বা অপূর্ণ ভাবি জীবনের প্রয়ােজন যথাযথ পূরণে। ০৪. আমার (ঔষুধ ছাড়া) ঘুম সহজে আসে না বা ঘুম থেকে উঠলে ও আমি ফ্রেশ বােধ করি না। ০৫. আমি স্থির হয়ে বসতে পারি না। সর্বদা কিছু নাড়াচাড়া করি। ০৬. আমি ভয় পাই যে আমি নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছি। ০৭. আমি ধারাবাহিক ব্যক্তিগত সমস্যার ভেতর দিয়ে যাচ্ছি এবং এটা নিয়ে সব সময় চিন্তিত। ০৮. আমি অনুভব করি না যে আমি কোনকিছু থেকে আনন্দ গ্রহণ করতে পারি, মজা নিতে পারি। ০৯. আমি অসহায়ত্ব অনুভব করি যে আমি খারাপ একটা অবস্থার ভিতর দিয়ে যাচ্ছি এবং আমি এটাকে ভাল করতে অক্ষম। ১০. আমার যা যা কাজ করবার প্রয়ােজন আমার - তা তা করবার পরিপূর্ণ শক্তি নাই। প্রশ্নগুলাের উত্তর তিন ভাগে ভাগ করুন:- ১. বেশির ভাগ সময় ২. মাঝে মাঝে ৩. কখনই না। প্রতিটি বেশির ভাগ সময়কে ১০ নম্বর দিন। প্রতিটি মাঝেমাঝে সময়কে ৫ নম্বর দিন। প্রতিটি কখনই না সময়কে ০ নম্বর দিন। এবার মােট যােগফল যদি ৫০ এর বেশি হয় তবে আপনি স্ট্রেস আক্রান্ত। আপনার কোপিং স্ট্রাটেজি বদল করুন। প্রয়ােজনে অন্যের সহায়তা নিন।
অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া পেশায় চিকিৎসক হলেও তাঁর প্রথম নেশা মনস্তত্ত্ব। মনোজাগতিক ক্যানভাসে মস্তিষ্কের নিউরনের সাথে অনুভূতির সংযোগ খোঁজেন মুগ্ধ চিত্তে। তাঁর আরেকটি নেশা ভলান্টিয়ার কাজ করা। পাহাড়ে কিংবা সমতলে, আদিবাসী কিংবা বাঙালি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সাথে এই কাজ করাকে তিনি মনে করেন আসলে প্রান্তিকদের জন্য নয়, নিজের মনোজগতিক সতেজতা বজায় রাখার জন্যই করেন। কারণ স্বাস্থ্যর চারটি ভাগ আছে। শারীরিক, মানসিক, সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্য। এই প্রতিটি স্বাস্থ্যর যত্ন করা সম্মিলিতভাবে একজন মানুষের ভালো থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। সেই ধারাবাহিকতায় মনোসামাজিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে তিনি ফিনিক্স নামে সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি গ্রুপ খুলেছেন। যেখানে মানুষ অকপটে মনের কথা বলবার প্রক্রিয়া চর্চা করেন। সেই গ্রুপের আপ্ত বাক্য হলো, 'We are not independent we are interdependent.' তিনি বিশ্বাস করেন প্রতিটি মানুষ জীবন যুদ্ধে কখনো না কখনো রূপকথার ফিনিক্স পাখির মতন পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সেই ছাই থেকে আবার 'আপনা মাঝে শক্তি ধরে' নতুন জন্ম নেয় সেই মানুষটির নতুন এক সত্তা। মানুষটি তখন নিজের সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে হয়ে যান একজন ঝলমলে ফিনিক্স। এটি কিন্তু প্রতিটি মানুষের জীবনে দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত একটি চলমান প্রক্রিয়া। 'কম টেস্টোস্টেরন ও মনোদৈহিক প্রভাব', 'স্ট্রেস', 'স্থূলতার মনোদৈহিক প্রভাব ' নামে তাঁর বই আছে।